ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় সন্দ্বীপের রনিসহ আট বাংলাদেশির মৃত্যু
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:৪৩ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৫

টানাটানির সংসার সামলাতে চায়ের দোকান চালাতেন মোশাররফ হোসেন রনি। সংসারে একটু স্বাচ্ছন্দ্য আনার আশায় দুই বছর আগে ধার করে পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না—ঋণ শোধ হওয়ার আগেই নির্মম সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন তিনি।
রনির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারে। প্রিয়জনের লাশ দ্রুত দেশে ফেরত আনা ও পরিবারকে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা।
বুধবার (৮ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুর ৩টা ২০ মিনিটের দিকে ওমানের দুখুম সিদরা এলাকায় ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রনিসহ আট বাংলাদেশি নিহত হন। তাদের মধ্যে সাতজনই চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দা। নিহত সবাই সাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তবে গাড়ির চালক অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত মোশাররফ হোসেন রনির বাড়ি সন্দ্বীপ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। পাঁচ ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন কনিষ্ঠদের একজন। আড়াই বছর আগে রনি বিয়ে করেন। তার একমাত্র ছেলে মোহাম্মদ ওসমান গণির বয়স মাত্র দেড় বছর। মাত্র দুই মাসের ছুটি কাটিয়ে তিনি ১ মাস ২১ দিন আগে ওমানে ফিরে গিয়েছিলেন।
ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে স্তব্ধ রনির বাবা, আর মা বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রনির বড় ভাই মোহাম্মদ জুয়েল বলেন, “আমার ভাই বাড়িতে ছোট্ট একটা চায়ের দোকান চালাত। দুই বছর আগে ধার করে ওমান যায়। এখনো সব ঋণ শোধ করতে পারেনি। তার আগেই ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেল।”
তিনি আরও বলেন, “দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেও ভাই বাবা ও স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছিল। পরিবারের সবার খোঁজ নিয়েছিল।”
রনির মরদেহ দ্রুত দেশে আনার অনুরোধ জানিয়ে জুয়েল বলেন, “আমাদের সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। শুধু চাই ভাইয়ের লাশটা যেন দেশে আনা হয়। সরকার যেন দ্রুত লাশ ফিরিয়ে আনে এবং পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে।”