
দেশজুড়ে শোক আর উত্তেজনার আবহে সংবাদমাধ্যমে হামলার ঘটনায় কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তিনি সরকারকে সম্পূর্ণ দায়ভার নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার ১৯ ডিসেম্বর ভোরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে মির্জা ফখরুল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং সরকারের দায়িত্বের বিষয়টি সামনে আনেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের জানমালের দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। শহীদ হাদির মৃত্যুতে শোকার্ত জাতি যখন সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করছে হাদির আত্মার মাগফিরাতের জন্য, তখন ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বরেণ্য সাংবাদিক নূরুল কবীরসহ আরও অনেকের উপর হীন হামলা সংঘটিত হলো।’
এই পরিস্থিতিকে গভীরভাবে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘দেশের সংকটময় মুহূর্তকে কাজে লাগানোর জন্য যারা অপেক্ষা করে, এরা এই দেশের শত্রু। তারা অপেক্ষা করে সংকটের। আজ এই দুঃখভারাক্রান্ত মুহূর্তকে এরা ধ্বংসাত্মক কাজে রূপান্তর করলো। আমি এই সন্ত্রাসের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি! সরকারকে এই ঘটনার পুরো দায়িত্ব নিতে হবে।’
দীর্ঘ সময় ধরে চলমান সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন মব সন্ত্রাস জাতিকে বিভক্ত করে রেখেছে। তিনি লেখেন, ‘হাদি নির্বাচনে প্রার্থী ছিল। জনগণের দরজায় গিয়েছিল। নির্বাচন হবে। বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, ইনশাআল্লাহ। হাদির আততায়ীর বিচার এবং প্রতিটি মব সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে।’
পোস্টের শেষাংশে তিনি সরকারের দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে লেখেন, ‘স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পরে সরকারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন করা। আমরা সকল পক্ষকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে আহ্বান জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগের সময় চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন। গুলি তার মাথায় লাগে। ঢাকায় চিকিৎসার পর তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু ঘিরে বর্তমানে রাজধানী ঢাকা উত্তাল ও থমথমে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।