
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী রোববার জানান, নির্বাচন কমিশন থেকে শাপলা কলির চূড়ান্ত ডিজাইন এখনও তাদের হাতে পৌঁছায়নি। এর ফলে দল নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারছে না। তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নামতে পারছি না। এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি।”
রোববার সকালে শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন হলে সংবাদ সম্মেলনে নাসীরুদ্দীন আরও বলেন, দলের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার পরও প্রতিটি দলীয় অফিসে হয়রানি চলতে থাকে। বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা অফিস ভাড়া দেওয়া ব্যক্তিদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, মাঠ পর্যায়ে হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে পারিবারিক হেনস্তা পর্যন্ত ঘটেছে। প্রতীকের ক্ষেত্রে শারীরিক ক্ষতি করা হয়েছে। “কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর স্বার্থে দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা শাপলাকলি মার্কা নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইলেকশন কমিশন থেকে আমরা আমাদের শাপলা কলির যে ডিজাইনটা এটা এখনো পাইনি। আমরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নামতে পারছি না। এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি।”
নাসীরুদ্দীন জানান, জুলাই সনদ এবং সংস্কার প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন নিয়ে একটি দীর্ঘ যাত্রা পেরোতে হয়েছে। তিনি বলেন, “সংস্কার বিচার তারপরে হলো নির্বাচন। সংস্কারের কার্যক্রম একটা প্রক্রিয়ায় গিয়েছে। এখন আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরে এটা বাস্তবায়ন কীভাবে আমরা করব? তাদের কমিটমেন্ট ইস্যু এবং বিচারের জায়গায় শেখ হাসিনার রায় হয়েছে। আমরা গতকালকে মিছিল করেছিলাম যে তার রায়টা যেটা হয়েছে এটা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সরকারকে যাওয়ার জন্য। আমরা এই দুইটা প্রক্রিয়ার শেষ করে, ইলেকশন প্রসেসে যাচ্ছি। আমরা যে কমিটমেন্টটা দিয়েছিলাম সেই কমিটমেন্টটা আমরা রেখেছি। আগামীতে ইনশাআল্লাহ সংসদে গিয়ে জনগণকে যে কমিটমেন্টগুলো সেগুলো ইনশাআল্লাহ বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টা চালাবো।”
তিনি ২৪ গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণ করে বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার। এই তিনটি চেতনা থেকে মুক্তিযুদ্ধকে শুধু আওয়ামী লীগ নিজের পকেটস্থ করেছিল। ... এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ছিল আমরা নারীদের জন্য একটি সুন্দর সমাজ তৈরি করব। এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ছিল আমাদের যারা মিডিয়া সেক্টরে ভাইয়েরা কাজ করছেন তাদের জন্য আমরা সুন্দর এনভায়রনমেন্ট সৃষ্টি করে দেব।”
নাসীরুদ্দীন আরও জানান, গণঅভ্যুত্থানের লড়াই করা প্রার্থীদের সংসদে পাঠানো অপরিহার্য। তিনি বলেন, “আজকে তাদের ভাইভা শুরু হবে। তারা শাপলা কলি মার্কা নিয়ে সংসদে যাবে। তারা আপনাদের যে স্পিরিটগুলো রয়েছে, আমরা সংসদে গিয়ে সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন করবো।”
বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার প্রয়োজনীয়তাও তিনি উল্লেখ করেন। “যেই চেতনাগুলার কথা বলি আমরা সেগুলো যদি সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলেই ভবিষ্যৎ যে বাংলাদেশের স্বপ্নটা আমি আপনি দেখি সেটা আমাদের গঠন করা সম্ভব।”
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক জানান, নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগের প্রভাব এখনও বিদ্যমান। প্রশাসনে যারা আওয়ামী লীগ ছিল, তারা এখনও রয়েছে। প্রশাসনিক নিয়োগ স্বচ্ছভাবে করার জন্য ইউনূস স্যার নেতৃত্বে এই কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, দলটি একটি রেভলিউশনরি ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে এবং এখন ডেমোক্রেটিক প্রক্রিয়ার মধ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে দলীয় কার্যক্রমে তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
নাসীরুদ্দীন বলেন, “আজকে আমরা যেখানে উপস্থিত হয়েছি আমাদের ১০টা বোর্ড রয়েছে। প্রত্যেক বোর্ডে ১০ জন করে মেম্বার রয়েছেন। আমাদের এই পর্যন্ত ১,৪৮৪ আবেদন ফর্ম জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতি আসনে গড়ে পাঁচজন প্রার্থী রয়েছে। আমরা অনলাইন এবং অফলাইন উভয় প্রক্রিয়ায় ফর্ম নিয়েছি। অফলাইনে ৭৬১ জন, অনলাইনে ৭২৩ জন ফর্ম জমা দিয়েছেন। সুতরাং আজকে তাদের ভাইভা শুরু করেছি। এখানে ১০টা সাংগঠনিক বিভাগ আমরা করেছি।”