.png)
ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় ডেকে এনেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ডাক পেয়ে তিনি সোমবার রাতে ঢাকায় পৌঁছান।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র হাইকমিশনারের ঢাকা ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতেই তাকে জরুরি তলব করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক পর্যালোচনার অংশ হিসেবে সোমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মধ্যে এক দফা আলোচনা হয়। আজ বা আগামীকালের মধ্যেই দিল্লি থেকে ফেরা হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে নিয়ে বৈঠকে বসতে পারেন তারা।
সম্প্রতি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি এবং ময়মনসিংহে পোশাক কারখানার শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন করে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর পাশাপাশি ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাও পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এর জেরে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের ভিসা ও কনস্যুলার সেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা। সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে হিন্দুত্ববাদী তিনটি সংগঠনের হামলার পর ওই কেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটে।
এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ঢাকা ও দিল্লিতে দুই দেশের হাইকমিশনারদের পাল্টাপাল্টি তলব দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। গত দুই সপ্তাহে উভয় দেশ দুবার করে একে অপরের কূটনীতিককে তলব করে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানায়।
সবশেষ গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় একই দিন বিকেলে দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে। একই দিনে দুই দেশের দূতকে পাল্টাপাল্টি তলবের ঘটনা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাসে প্রথম বলে মনে করা হচ্ছে।