গর‌মে দেড় হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোড‌শে‌ডিং হ‌তে পা‌রে: জ্বালা‌নি উপ‌দেষ্টা


Feb 2025/Foujul Kabir Fuel.jpg

আসন্ন গরম মৌসুমে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। তবে রমজানে লোডশেডিং মুক্ত রাখতে চেষ্টা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা হবে ১৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট।’ 

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিদ্যুৎ ভবনে আসন্ন রমজান ও সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এসব কথা জানান। এ সময় জ্বালানি সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে ফাওজুল কবির বলেন, ‘বিদ্যুতের ক্ষেত্রে প্রাথমিক জ্বালানি গ্যাসের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। রমজানে লোডশেডিং মুক্ত রাখতে অতিরিক্ত চার কার্গো গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করব। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। রমজান মাসের জন্য ১২০ কোটি ঘনফুট এবং এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১০ কোটি গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে। গ্রীষ্মে মূলত সেচ ও এয়ারকন্ডিশনের জন্য চাহিদা বেড়ে যায়। আমরা সেচে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিতে চাই। তবে এয়ারকন্ডিশনের লোড কমানোর চেষ্টা করা হবে।’

ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘প্রাথমিক জ্বালানি সমস্যার কারণে লোডশেডিং করতে হয়। রোজা ও গ্রীষ্মে মৌসুমে কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছি। যাতে করে জ্বালানি আমদানি করতে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট না হয়।’

লোডশেডিংয়ের কারণ সম্পর্কে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, ‘আর্থিক কারণে নয়, অপচয়ের কারণে লোডশেডিং বেশি হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘গ্রীষ্মে কুলিং লোডের (এসির লোড) পরিমাণ হচ্ছে ৬ হাজার মেগাওয়াট। আমরা যদি এসি তাপমাত্রা ২৪-২৫ রেখে চালাই, তাহলে দুই হাজার থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট সাশ্রয় করা সম্ভব।’ 

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এবার লোডশেডিং করার ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য করা হবে না। ঢাকা থেকে লোডশেডিং শুরু হবে। শহর গ্রামে সমান লোডশেডিং হবে।’ 

বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রে বকেয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘বেসরকারি কেন্দ্রগুলোর বিদ্যুৎ সরবরাহ যাতে বন্ধ করতে না হয়, সেজন্য তাদের বকেয়াও পরিশোধ করা হবে। সম্পূর্ণ হয়ত করা যাবে না।’

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেসব কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘বড় কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি পর্যালোচনায় যে কমিটি কাজ করছে, তাদের আইনি সহায়তা প্রয়োজন। সেটি নিয়ে কাজ চলছে। এছাড়া ট্যারিফ পুনর্মূল্যায়নের জন্য গঠিত কমিটি কাজ করছে। তিনি বলেন, কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের বিদ্যুতের দামের বিষয়ে একটি বেঞ্চমার্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। মাতারবাড়ি কেন্দ্রের ইউনিট প্রতি খরচ হচ্ছে ৮ টাকা ৪০ পয়সা। এখন এই বেঞ্চমার্ক ধরে অন্যান্য কেন্দ্রের চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×