
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে চলমান শাটডাউন কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা ঘোষণা করেছেন, রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ এবং ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আগামী রোববার থেকে তৃতীয় প্রান্তিক বা বার্ষিক পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী কমসূচি ঘোষণা করা হবে।"
এর আগে, বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে তিন দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকরা তালা ঝুলিয়ে কমপ্লিট শাটডাউন পালন করছিলেন। এর ফলে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়।
সহকারী শিক্ষকদের প্রধান দাবিগুলো হলো দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি। এই তিন দফা দাবিতে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ডাকে তারা আন্দোলন চালাচ্ছিলেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত। এর মধ্যে অধিকাংশই সহকারী শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকরা ইতিমধ্যে দশম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন, কিন্তু সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১৩তম গ্রেডের বেতন পাচ্ছেন, যা তাদের অসন্তুষ্টির কারণ। দীর্ঘদিন ধরে গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে তারা আন্দোলন করে আসছেন।
গত ৮-১১ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরেন। তবে আশ্বাস বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে তারা পুনরায় কর্মবিরতি শুরু করেন এবং ১ ডিসেম্বর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করেন।