
গরু ডাকাতির সময় পথে যেন মারা না যায়- এ উদ্দেশ্যে ক্যাভার্ড ভ্যানে অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখতেন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার সেলিম। শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রায় ৬৫ কিলোমিটার ধাওয়া করে তাকে গ্রেফতার করে । পুলিশের তথ্যমতে, সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মোট ১৯টি মামলা রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সুধারাম মডেল থানা পুলিশ সেলিমকে তার সহযোগী জয়নালসহ গ্রেপ্তার করে। অভিযানে ডাকাতিতে ব্যবহৃত নম্বর প্লেটবিহীন একটি ক্যাভার্ড ভ্যান, দেশীয় অস্ত্র এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন—নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বড়দেইল গ্রামের আলেব বেপারী বাড়ির গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সেলিম এবং সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুলালের বাপের বাড়ির সৈয়দ আহাম্মদের ছেলে মো. জয়নাল আবেদীন।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু ডাকাতি করে আসছিল, এতে বহু খামারি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সুধারাম মডেল থানার সামনে থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার ধাওয়া করে কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড সাউথ ফিলিং স্টেশন এলাকা থেকে সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নোয়াখালীর আন্ডারচর এলাকা থেকে জয়নালকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি নম্বর প্লেটবিহীন ক্যাভার্ড ভ্যান, দুটি ধারালো দা, একটি বড় কাটার, এক কেজি ওজনের মোটা রশি এবং একটি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেন, তারা ক্যাভার্ড ভ্যান ব্যবহার করে নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় গরু ডাকাতি করতেন। ডাকাতির সময় গরু জীবিত রাখতে গাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখা হতো। তারা ২০২৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে আন্ডারচর এলাকার খান এগ্রো ফার্মে ডাকাতির কথাও স্বীকার করেন।
সুধারাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সেলিম একজন কুখ্যাত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার। তার বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায় হলেও তিনি এই অঞ্চলের বহু খামারি ও কৃষককে নিঃস্ব করেছেন।’ উদ্ধারকৃত আলামত ও জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরও তদন্ত চলমান রয়েছে।