
নোয়াখালীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির সদ্য ঘোষিত জেলা আহ্বায়ক কমিটিতে ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যাপক পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। ৪১ সদস্যের কমিটি প্রকাশের পর মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতেই একে একে ২৩ জন নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
সংগঠনের যাচাইকৃত ফেসবুক পেজে জেলা কমিটির অনুমোদন প্রকাশের পর থেকেই এই পদত্যাগের ধারা শুরু হয়। সূত্র জানায়, প্রথমেই পদত্যাগ করেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত। তার পরপরই যুগ্ম সদস্য সচিব-১ ছাড়া অন্য সব যুগ্ম সদস্য সচিব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিবসহ বেশ কয়েকজন পদধারীও কমিটি থেকে সরে দাঁড়ান। এতে সংগঠনের ভেতরে তীব্র অস্থিরতা তৈরি হয়।
পদত্যাগকারীরা অভিযোগ করেন, তৃণমূলের নিবেদিত কর্মীদের মূল্যায়ন না করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রভাব ও লবিংয়ের ভিত্তিতে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে প্রকৃত পরিশ্রমী ও মাঠপর্যায়ের নেতারা উপেক্ষিত হয়েছেন বলে তাদের দাবি।
একাধিক পদত্যাগকারী বলেন, “আমরা সংগঠনের প্রতি অনুগত থাকলেও ন্যায়বিচারহীন এই কমিটিতে থেকে আমাদের আদর্শের সঙ্গে আপস করা সম্ভব নয়।”
জানা গেছে, পদত্যাগকারীদের মধ্যে শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই আন্দোলনে আহত কর্মীরাও রয়েছেন। ফলে নবগঠিত জেলা কমিটিতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ আরও গভীর হচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রথম পদত্যাগী সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত বলেন, “আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছিলাম, আজ আমরাই বৈষম্যের শিকার হলাম। কেন্দ্রীয় নেতারা পছন্দের মানুষ দিয়ে কমিটি করেছে, তাই পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। সব মিলিয়ে এই কমিটি আর চলার মতো অবস্থায় নেই।”
তিনি আরও জানান, “৪১ সদস্যের কমিটি থেকে ২৩ জন পদত্যাগ করেছে। এর মধ্যে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক, শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই আহত যোদ্ধাও রয়েছেন। আমরা সংবাদ সম্মেলন করে এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করব। এটা আমাদের প্রতিবাদ, আমরা কথা ও প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।”
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় যুবশক্তির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কমিটি গঠনের জন্য সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকা হয়নি। তারা বলেন, “তৃণমূলের ক্ষোভ আমরা জানি, বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যালোচনা করা হবে।”
অন্যদিকে জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম-এর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন ও বার্তা পাঠানোর পরও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, ফলে তার বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।