গণপিটুনিতে জামাই ও শ্বশুর নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
- রংপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৫:৪৫ পিএম, ১১ আগস্ট ২০২৫

রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে জামাই ও শ্বশুর নিহতের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী। সোমবার (১১ আগস্ট) ভোরে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়।
রংপুর জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলে দুপুরে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন চরকডাঙ্গা বালাপুর গ্রামের আলেফ উদ্দিনের ছেলে আখতারুল ইসলাম (৪৫), রহিমাপুর (খান সাহেবপাড়া) এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (২৬), বুড়িরহাট ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাফর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০) এবং সয়ার বালাপুর গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে ইবাদত আলী (৩৫)।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত তারাগঞ্জ থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে রোববার দুপুরে নিহত রূপলাল দাসের স্ত্রী ভারতী রানী তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তারাগঞ্জ বাজারে জুতা সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন রূপলাল দাস। শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিঠাপুকুরের ছরান বালুয়া এলাকা থেকে জামাই প্রদীপ দাসকে নিয়ে ভ্যানে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন তাদের থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর সন্দেহজনক অবস্থায় প্রদীপ দাসের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে থাকা দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় ও কিছু ওষুধ পান করা হয়। বোতল খুলে দুর্গন্ধে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। উত্তেজিত লোকজন রূপলাল ও প্রদীপকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রূপলালকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে রোববার ভোর ৪টার দিকে তিনি মারা যান।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, "নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। আমরা অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।"