দিনের বেলায় কিশোর গ্যাং, রাতে মাদকসেবীদের দখলে থাকে সাটুরিয়ার ডিসি পার্ক
- মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:০২ পিএম, ০২ জুলাই ২০২৫

দিনের বেলায় কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডা। রাতে বসে মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের আড্ডা। এই কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীদের আনাগোনা সাটুরিয়ার ডিসি পার্কে। উপজেলার হাতকোড়া মৌজায় এই কৃত্রিম দ্বীপ ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এই পার্কে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যে অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটালেও মাদকসেবী ও কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না স্থানীয়রা।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, এই কৃত্রিম দ্বীপটি দখল করে নিয়েছিলেন আসমান আলী নামে এক ব্যক্তি। সরকার পক্ষ মামলা করে ৪ একর ৬৬ শতাংশ সরকারি জমিসহ দ্বীপটি উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল কৃত্রিম দ্বীপটির ডিসি পার্ক নামকরণ করে উদ্বোধন করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস। সরকারি অর্থায়নে কিছু স্থাপনা করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে সেগুলো।
জানা গেছে, এই কৃত্রিম দ্বীপটি বালিয়াটি জমিদারবাড়ির জমিদাররা করেছিলেন ২০০ বছর আগে। জলাশয়ের মাঝখানে গোলাকার একটি দ্বীপ। যেখানে জমিদাররা পানসী নৌকায় চরে জ্যোৎস্না রাত উপভোগ করতেন এবং আনন্দ-বিনোদন করতেন। জমিদারি প্রথা চলে যাওয়ার পর বা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দ্বীপটি ভুয়া দলিলপত্রে দখল করে নিয়েছিলেন আসমান আলী নামে এক ব্যক্তি। কয়েক যুগ ভোগদখল করেন তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি জমিদারবাড়ি এখন পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই কৃত্রিম দ্বীপকে বালিয়াটি জমিদারবাড়িতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য সংস্কার করে একটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হলে সরকার এই ডিসি পার্ক থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পাবে।
এদিকে ডিসি পার্কে তদারকি না থাকায় প্রতিনিয়ত ঘটছে অসামাজিক কার্যকলাপ। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে ডিসি পার্ককে দৃষ্টিনন্দন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাটুরিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কয়েকটি প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সরকার পাবে রাজস্ব। রক্ষা পাবে এলাকার মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ডিসি পার্ককে দৃষ্টিনন্দন করতে কয়েকটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দ্বীপটির মধ্যে কয়েকটি নৌকা, পিকনিক স্পট, গাড়ি রাখার পার্কিং, শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদনের জন্য কয়েকটি রাইড গড়ে তোলা হবে। পর্যটকরা টিকিটের মাধ্যমে ডিসি পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ছাড়া শীতকালে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পিকনিক করতে চাইলে ভাড়া নিতে পারবে। তাঁর ভাষ্য, ডিসি পার্কটির প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুতই শেষ করা হবে। এতে কিশোর গ্যাং ও মাদকসেবীদের হাত থেকে এলাকাবাসী রেহাই পাবে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।