
নরসিংদীর রায়পুরায় মনির হোসেন (২৮) নামে এক ছেলের শাবলের আঘাতে পিতা কবির মিয়ার (৫০) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের বাহেরচর পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে মনির হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত কবির মিয়া বাহেরচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের ফজলু মিয়ার ছেলে এবং অভিযুক্ত মনির হোসেনের পিতা।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে মনির হোসেনকে নিয়ে দোচালা একটি ঘরে বসবাস করতেন কবির হোসেন। রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ শাবল দিয়ে মনির তার ঘুমন্ত বাবাকে আঘাত করে। এক পর্যায়ে আহত কবির দৌড়ে পাশের একটি জমিতে চলে আসেন। এসময় তার পিছু নিয়ে ফের আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এতে ঘটনাস্থলে কবিরের মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় মানসিক ভারসাম্যহীন মনিরকে বাধা দেওয়ার সাহস পাননি প্রতিবেশীরা। এক পর্যায়ে এলাকার লোকজন মিলে মনিরকে আটক করে হাত-পা বেঁধে পুলিশকে খবর দেয়।
প্রতিবেশী জয়নাল মিয়া বলেন, কবির হোসেনের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবার বড় মনির। এক বছর আগে সৌদি আরবে যায় মনির। কাজ না পেয়ে কিছুদিনের মধ্যেই দেশে ফিরে আসে মনির। এরপর থেকে সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে এবং এলাকায় পাগলামি করতে থাকে। গত ছয়মাস আগে দাদি, ফুফু ও চাচাতো বোনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এই মনির। ওই ঘটনায় করা মামলায় তিন মাস কারাগারেও ছিল সে। পরে ছেলে মনিরকে জামিনে ছাড়িয়ে আনেন পিতা কবির হোসেন। তারপর থেকে ছেলেকে নিয়ে পিতা কবির হোসেন একটি দোচালা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করতেন এবং নিজেই ছেলের দেখাশোনা করতেন।
জয়নাল মিয়া আরও বলেন, আমার বাড়ির পাশের জমিতেই শাবল দিয়ে করিবকে পিটিয়ে হত্যা করে তার ছেলে। তখন মনিরের হাতে শাবল থাকায় তার সামনে কেউ যেতে সাহস পায়নি। পরে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে মনিরকে আটক করে হাত-পা বেঁধে পুলিশকে খবর দেয়।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানান, প্রবাসফেরত ছেলের শাবলের আঘাতে কবির হোসেন নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর তার ছেলেকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে আটক মনির মানসিক ভারসাম্যহীন কিনা তা ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা যাবে।