জয়পুরহাটে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ, ১০ দিন পর মামলা
- জয়পুরহাট প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১০:৪৩ এম, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

জয়পুরহাট সদর উপজেলায় কৌশলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক তরুণীকে (২৩) স্থানীয় চা দোকানি জাকির হোসেন (৪৫) ধর্ষণ করেছেন বলে থানায় মামলা করা হয়েছে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর রোববার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে জাকির হোসেনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল সদর উপজেলার একটি গ্রামে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার ১০দিন পর থানার মামলা করা হয়েছে। জয়পুরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম সিদ্দিক রোববার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ধর্ষণের শিকার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ওই তরুণীর (২৩) বাড়ি জয়পুরহাট সদর উপজেলার একটি গ্রামে। অভিযুক্ত জাকির হোসেন (৪৫) একজন চা দোকানি। তারা একই গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী ওই তরুণী প্রতিদিন সকালে নিজ বাড়ি থেকে স্থানীয় বাজারে যেতেন। সেখানে বিভিন্ন দোকানে কিছু কাজ করে এবং কাজের বিনিময়ে কেউ কিছু টাকা দিলে তা নিতেন বা খাবার দিলে তা খেতেন। সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে চলে আসেন। গত ১৭ এপ্রিল দুপুরে আসামি জাকির ওই তরুণীকে বাজার থেকে নিজ বাড়িতে কৌশলে ডেকে নেয়। এরপর বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জাকির নিজ শয়ন কক্ষে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পরেরদিন ১৮ এপ্রিল লোকের মাধ্যমে তরুণীর বাবা বিষয়টি জানতে পারেন। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটির পর স্থানীয় প্রভাবশালীরা অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। বাইরে জানাজানি হলে শনিবার (২৬ এপ্রিল) জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসিবুল হক সানজিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এরপর ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসন নড়েচড়ে বসেন। থানা পুলিশ ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর রোববার দুপুরে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ভুক্তভোগী বাক-প্রতিবন্ধি তরুণীর বাবার সঙ্গে রোববার রাতে জয়পুরহাট থানার ভেতরে কথা হলে তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়নি। আমি এতোদিন ভেবে তারপর মামলা করেছি। তবে ঘটনার ৬ দিন পর আসামি পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল দশ হাজার টাকা দেব, মিটিয়ে নাও। আমি টাকা নেইনি।
জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসিবুল হক সানজিদ বলেন, একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনাটি স্থানীয় প্রভাবশালীরা অর্থের বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানতে পারি। পরে রোববার দুপুরে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিসহ থানায় যাওয়া হয়। তখন পরিবারের পক্ষে ওই মেয়ের বাবা মামলা করেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর আলম সিদ্দিক বলেন, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এই মেয়ে ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় আজকে (রোববার) থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা গোপনভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করেছে কি-না তা জানা নেই। বিষয়টি জানার পরই আমরা আইনগতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করি।