মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
- পাবনা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:২১ পিএম, ০১ জানুয়ারী ২০২৫

পাবনা জেলার বেড়া উপজেলায় ছাত্রদলের মিছিল থেকে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে বেড়া বাজার এলাকার কাদের ডাক্তারের মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বেড়ায় বেশ কয়েকটি মিছিল বের হয়। দুপুরে দুই দিক থেকে আসা দুইটি মিছিল কাদের ডাক্তারের মোড়ে এসে পৌঁছালে হালকা ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর মসজিদের মাইকে মাইকিং করে উপজেলার পৌর এলাকার হাতিগাড়া ও বনগ্রাম সওদাগর পাড়ার মধ্যে এলাকাভিত্তিক সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ সময় দেশীয় নানা অস্ত্র নিয়ে হামলা-পাল্টা হামলা করে উভয় পক্ষ। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে তাদের ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া লোকজন। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সংঘর্ষে লিপ্ত দুইটি মিছিলের একটির নেতৃত্বে ছিলেন বেড়া পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন ও অন্যটির নেতৃত্বে ছিলেন পৌর এক নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক প্রান্ত সওদাগর ও দুই নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবু বক্কার ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
সংঘর্ষে বেড়া পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর মোল্লাসহ উভয় পক্ষের ৩০ নেতকর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত দুইজন বনগ্রাম মহল্লার রাহাত সওদাগর ও আবু হানিফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতদের মধ্যে শাকিল (২২), তুষার সওদাগর (২৫), রাসেল (২৫), শাহজাহান (৩৮), আয়মান (২৬), মনিরুল (২২), কাওসার (২৭), ইমরান (২৯), সোলাইমান শেখ (৪৫), ইয়াছিনসহ (২০) অন্তত ৩০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতরা পৌর এলাকার বনগ্রাম হাতিগাড়া ও শেখপাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর দুই প্লাটুন সদস্য ও বেড়া সাঁথিয়া ও আমিনপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ নিয়ে বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অলিউর রহমান জানান, বেড়া-সাঁথিয়া, আমিনপুর থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দুই প্লাটুন সদস্য উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। বর্তমান এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এ দিকে, সংঘর্ষকে দলীয় ঘটনা নয় বলে দাবি করেছে ছাত্রদল। বেড়া পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মানিক হোসেন জানান, দুই গ্রামের ছেলেদের মধ্যে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে দুই দল গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর সঙ্গে ছাত্রদলের কোন সম্পর্ক নেই। মিছিলে একটু ধাক্কা লাগা থেকে এত বড় সংঘর্ষ হয়। এটা আমরা প্রত্যাশা করিনি।