নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আব্দুর রব খান

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আব্দুর রব খানঢাকা:নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হলেন অধ্যাপক আব্দুর রব খান।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ২৮ আগস্ট জরুরি বোর্ড মিটিং সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রফেসর আব্দুর রব খানকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার অর্পণ করেছেন ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড।সরকারের পট পরিবর্তনের পর থেকে উপাচার্য প্রফেসর আতিকুল ইসলাম অনুপস্থিত আছেন।প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তার বর্তমান ভূমিকা ছাড়াও উপাচার্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করতে ট্রাস্টি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়।

ত্রাণের টাকা নিয়ে দুই ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক

কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজের ওসমান গনি ছাত্রাবাস ও ওয়াসিমুদ্দিন ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের মাঝে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার সময় এই সংঘর্ষ হয়। কলেজশিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল, সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওয়াসিমুদ্দিন ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা জানায়, বন্যার্তদের মাঝে কলেজের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণের জন্য তহবিল গঠন করা হয়। তহবিলের টাকা ওয়াসিমুদ্দীন ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা দিনরাত পরিশ্রম করে সংগ্রহ করে। রবিবার রাত ১০টায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার জন্য দুই হলের শিক্ষার্থীদের একটি সভা হয়। পরে ওসমান গনি ছাত্রাবাসের বিদায়ী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী নাসিম, তুষার, হিরণ, অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মইন, ফয়সাল ও শফিকের নেতৃত্বে বহিরাগত কয়েকজন ওয়াসিমুদ্দিন হলে গিয়ে ত্রাণের টাকা জোর করে নিয়ে আসে।ত্রাণের টাকা তারাই সংগ্রহ করেছে দাবি করে কলেজের শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে দেয়। এ নিয়ে ওয়াসিমুদ্দীন ছাত্রাবাসের অনার্স চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে হলে ডেকে নিয়ে মারধর করে। মারধরের শিকার ওই শিক্ষার্থী হলে ফিরে গিয়ে সহপাঠীদের জানালে দুটি হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রথমে বাগ্‌বিতণ্ডা পরে সংঘর্ষ ও ইট–পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। দুই ঘণ্টা এই সংঘর্ষ চলে।এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিন থেকে চারজন শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ছাড়া আহত বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।ওয়াসিমুদ্দীন হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী দাবি করেন, ওসমান গনি হলের অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নাসিম তুষার, হিরণ, শফিক, মঈন, ফয়সাল ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা বিভিন্ন সময়ে বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের হলে আশ্রয় দেয়। অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ হলের পরিবেশ নষ্ট করে আসছে।কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। গুরুদয়াল সরকারি কলেজ প্রশাসন ও ছাত্রাবাস প্রশাসন যে ব্যবস্থা নেবে আমরা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আ. ন. ম. মুশতাকুর রহমান বলেন, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে গেছে। আমরা কলেজ কর্তৃপক্ষ অঙ্গীকারনামা দিয়ে আগে তাদের ছাড়িয়ে আনব। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের সিট বাতিল করা হবে।

বন্যার্তদের একদিনের বেতন দিলেন ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষকরা

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বন্যার্তদের সহায়তায় একদিনের বেতন প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির (বিডিইউ) শিক্ষকরা।বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক সমিতির একটি জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বন্যার্তদের সহযোগিতায় বিডিইউ শিক্ষক সমিতির সকল শিক্ষকের একদিনের সমপরিমাণ বেতন অনুদান হিসেবে প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।পাশাপাশি সকল সচেতন নাগরিককে বন্যার্তদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকে বন্যার্তদের সাহায্যে কার্যকরভাবে এগিয়ে আসার অনুরোধও করছে শিক্ষক সমিতি।টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। বন্যার পানিতে লাখ লাখ মানুষের বাড়িঘর-ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় তৈরি হয়েছে মানবিক বিপর্যয়। এর মধ্যে চার জেলায় সর্বশেষ আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ববি উপাচার্য-প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১টায় প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমান ভিসি ও প্রক্টর ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময়ে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছে। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের নানা অভিযোগ থাকলেও সবসময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের তাঁবেদারি করায় তারা কোনো প্রশ্নের সম্মুুখীন হননি। এই ভিসি এবং প্রক্টর যতদিন শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চেপে থাকবে, ততদিন সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাবেন না। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চলতো বরিশাল সিটি করপোরেশন সাবেক দুই মেয়র এবং সদর সংসদ সদস্যদের কথায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রক্টরসহ অনেক শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসায় বেশি দেখা যেতো। এসব বিষয় কখনোই সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেননি। সমাবেশ থেকে তাদের দুুইজনকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব স্তরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিযুক্ত ব্যক্তিদের গণপদত্যাগের সম্মুুখীন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা। সমাবেশে আইন বিভাগের সিরাজুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের মো. সিহাব, ইংরেজি বিভাগের মিজানুর রহমান মিজান, ইতিহাস বিভাগের মোশারফ হোসেন, বাংলা বিভাগের মো. আশিক আহমেদসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।

পদত্যাগ করলেন বুয়েট উপাচার্য

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের এ পর্যায়ে পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার। ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন। রোববার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। মাত্র দেড় মাস আগে গত ৩ জুলাই দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন তিনি। এর আগে ২০২০ সালের ২৫ জুন অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বুয়েটের উপাচার্য পদে নিয়োগ পান। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন আচার্য মো. আবদুল হামিদ তাকে চার বছরের জন্য এই পদে নিয়োগ দেন।

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মীকে ছুরিকাঘাত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) জামিউল ইসলাম হিমেল (২৪) নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে ছুরিকাঘাত করেছেন দুর্বৃত্তরা। রোববার (১৮ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত হিমেল ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক শেহজাদ হাসানের অনুসারী ছিলেন। ভুক্তভোগী হিমেল জানান, বেলা ১১টার দিকে তিনি হল থেকে খাবার খেতে ক্যাম্পাস গেটে যান। এ সময় এক ছেলে তাকে ফরিদা টাওয়ারের দিকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর ওই ছেলের সঙ্গে আরও তিনজন ছেলে যোগ দেন। পরে সেখানে তার হাতে এবং পায়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। ঘটনার পরে হিমেলের সহপাঠীরা প্রথমে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করান। সেখানের ডাক্তাররা তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর তার সহপাঠীরা তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। হিমেল বলেন, আমি ছাত্রলীগ করতাম তা ঠিক, কিন্তু কারো সঙ্গে আমার দ্বন্দ্ব ছিল না। এরপরও কেন আমাকে ছুরিকাঘাত করা হলো তা বলতে পারছি না। ছাত্রলীগ করার কারণে এটা হয়েছে কিনা সেটাও বলতে পারছি না। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মাসুদ রানা বলেন, সকালে আমাদের এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে বলে শুনেছি। পরে আমি তাকে দেখতে যাই। হিমেলকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করানো হয় ও পরে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। লিখিত অভিযোগ পেলে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো।

পদত্যাগ করলেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিলভিয়া আহমেদ

পদত্যাগ করলেন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিলভিয়া আহমেদ। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগের মুখে পদত্যাগ করেন তিনি। জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে অসহযোগিতামূলক আচরণের অভিযোগ আগামীকাল শনিবার ভিসি- প্রক্টর এর পদত্যাগ সহ বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এরই পরিপেক্ষিতে আজ পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিলভিয়া আহমেদ। ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করছেন সিনিয়র লেকচারার সৈয়দ আসিফ হোসেন।

লিয়াজোঁ কমিটির সাথে বৈঠক প্রসঙ্গে ৫ ছাত্র সংগঠনের যৌথ বিবৃতি

গতকাল (১৩ ই আগস্ট) ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ লিয়াজোঁ কমিটির দেওয়া বিবৃতি ও ছাত্র সংগঠনের সাথে আলোচনায় যে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো তা একে অপরের সম্পুর্ণ বিপরীত দাবি করে সে সম্পর্কে বৈঠকে উপস্থিত ৫ টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেছন। আজ (১৪ আগস্ট) সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) তাওফিকা প্রিয়া এই যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে বলা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটি গতকাল যে বিবৃতি প্রদান করেছে সেখানে আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করেছি বিবৃতিতে ছাত্র রাজনীতি কার্যত এক মাসের জন্য স্থগিতের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে যার সাথে বৈঠকে আমরা কেউই একদমই একমত হইনি I লিয়াজোঁ কমিটির বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোন নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ছাত্রসংগঠনগুলোর ভূমিকা থাকবে না।’ এ সম্পর্কে গতকাল বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে আজ বিবৃতিতে তার সম্পূর্ণ বিপরীত বক্তব্য দেয়া হয়েছে। বৈঠকে আলোচনা হয়েছিলো– ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ তার ওপর অর্পিত সকল দায়িত্ব পালন করবে। একই সাথে এই প্ল্যাটফর্ম ছাত্র সংগঠনগুলোর সাথে নিয়মিত বিরতিতে বসে মত বিনিময়-আলোচনা করবে যা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়াকে সহযোগিতা করবে। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন– ছাত্র - জনতার এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ নেতৃত্বে এই গণঅভ্যুণ্থানে প্রায় সকল ছাত্র সংগঠন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে। আমরাও প্রথম থেকেই এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছি, আন্দোলনকে বেগবান করতে সহযোগিতা করেছি। তারা বলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে ‘ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে’ এরকম আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আমরা আমাদের উদ্বেগ নানাভাবে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যদের কাছে বারবার প্রকাশ করেছি। এ পরিস্থিতিতে লিয়াজোঁ কমিটি গত ১২ আগস্ট সন্ধ্যা ৬ টায় টিএসসিতে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া সকল ছাত্রসংগঠনগুলোকে আলোচনার জন্য ডাকেন। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁরা ছাত্র সংগঠনগুলোর বক্তব্য খোলা মনে শুনবেন বলে আমাদের জানান। তাঁদের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা বৈঠকে উপস্থিত হই। বৈঠকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা জনাব নাহিদ ইসলাম ও জনাব আসিফ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন – লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষ থেকে সমন্বয়ক মাহফুজ আলম, সদস্য নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী ও আরিফুল ইসলাম আদিব। বৈঠকে আমরা ছাত্র রাজনীতি বন্ধের বিষয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখি। শুধু আমরাই নই, প্রায় সকল সংগঠন এ বিষয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে এবং ছাত্র রাজনীতি বন্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে। একই সাথে সকলে ওয়াদা করেন ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র রাজনীতির নামে সন্ত্রাস- দখলদারিত্ব এবং জুলুমের পরিবেশ নতুন করে তৈরি করতে দেওয়া হবে না। কোন সংগঠন এমনকি এই প্ল্যাটফর্ম থেকেও এমন কিছু করা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বৈঠকে আমরা আমাদের মতামত এইভাবে ব্যক্ত করি, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানেও ছাত্রসংগঠনগুলো ছাত্র- জনতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মের লড়াইয়ে সামিল হয়েছে, জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। সংগঠন করার অধিকার হলো মত প্রকাশের অধিকার। এই গণতান্ত্রিক অধিকার ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থান থেকে পাওয়া ‘নতুন বাংলাদেশে’ থাকবে না, এটা ফ্যাসিস্ট আচরণ যা আওয়ামীলীগ বজায় রেখেছিল। ফলে মত প্রকাশের অধিকারের অংশ হিসেবে ছাত্র রাজনীতি থাকবে। প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সবার জন্য বৈধ সিট বন্টন, সন্ত্রাস- দখলদারিত্বমুক্ত নিরাপদ গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস এবং গণরুম-গেস্টরুম প্রথার উচ্ছেদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে একসাথে লড়বো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল এবং ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস- দখলদারিত্ব নির্ভর ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকবো। ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসগুলোতে এসব অপকর্ম করতো বলেই আমরা তাদের তাড়িয়েছি। ফলে সন্ত্রাস- দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। তারা বলেন, সামনের দিনে কোনো ছাত্র সংগঠন সন্ত্রাস-দখলদারিত্বের চেষ্টা করলে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে। কিন্তু একজন শিক্ষার্থী কোন দল বা সংগঠন করবে – এটা তার মত প্রকাশের অধিকার। এই অধিকার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার হরণ করেছিলো। ছাত্রলীগ ব্যতীত অন্য কোন সংগঠন করার দায়ে ছাত্রদেরকে হল থেকে মেরে পিটিয়ে বের করা হতো, অনেক ক্ষেত্রে হত্যা পর্যন্ত করা হয়েছে। আমরা চাই, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা যে প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সেই প্ল্যাটফর্ম আরো প্রতিনিধিত্বমূলক ও শক্তিশালী হোক! এই প্ল্যাটফর্ম কোন ধরনের অগণতান্ত্রিক নীতি ঘোষণা না করুক! বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ ‘ ছাত্র রাজনীতি নয়, প্রয়োজন রাজনৈতিক সচেতনতা ’ শীর্ষক যে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করুন। এর জবাবে জনাব নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এখন পোস্ট ডিলিট করলে অনেক কথা উঠবে,সমস্যা হবে। তাই পোস্ট ডিলিট না করুক। কিন্তু আপনাদের (ছাত্র সংগঠনসমূহ) সাথে পরামর্শ ছাড়া ছাত্র রাজনীতি বন্ধের কোন সিদ্ধান্ত হবে না।’ এখানে উল্লেখ্য যে, যেহেতু বৈঠকে প্রায় সবগুলো সংগঠন ছাত্র রাজনীতির পক্ষে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে এবং ছাত্ররাজনীতি বন্ধের বিরোধিতা করে। ফলে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, ছাত্র রাজনীতি বন্ধে এখনই কোন সিদ্ধান্ত হবে না। এটি বিবৃতি আকারে দেশবাসীকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

পদত্যাগ করলেন চুয়েটের উপাচার্য

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) -এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। বুধবার ( ১৪ই আগস্ট) রাষ্ট্রপতি বরাবর উপাচার্য পদত্যাগের আবেদন করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। ২০১৩ সালের ৬ মার্চ চুয়েটের উপ-উপাচার্য হিসেবে প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম । ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন এবং একই বছরের ২৭ এপ্রিল চুয়েটের পঞ্চম উপাচার্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর ২০২০ সালের ২৫ আগস্ট দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। গতকাল (মঙ্গলবার) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপ-পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলামের কাছে ৩ দফা দাবি পেশ করে চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেখানে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালকের পদত্যাগসহ ১৫ আগস্টের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানায় তারা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ ১৪ আগস্ট (বুধবার) পদত্যাগ পত্র জমা দেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়েটের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাকে চাচ্ছে না। আমি চুয়েটের সবার মঙ্গল চাই। তাই চুয়েটের স্বার্থে আমি পদত্যাগ করে পদত্যাগপত্র রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠিয়েছি। বাকি কাজ রেজিস্ট্রার সম্পন্ন করবেন। উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৮ জুলাই পদত্যাগ করেন চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।

ভিসিসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের শূন্যতা দ্রুত পূরণের দাবি ঢাবি সাদা দলের

সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণ করলে ঢাকাসহ একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেছেন। তাদের এ পদত্যাগের ফলে সৃষ্ট শূন্যতা দ্রুত পূরণ সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে অবিলম্বে একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে ঢাবির বিএনপি-জামায়তপন্থী সাদা দলের শিক্ষকরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে কলা ভবন শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সাদা দলের এক সাধারণ সভা থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। সভায় যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও অধ্যাপক ড. আবদুস সালামসহ বিভিন্ন অনুষদের আহবাক, যুগ্ম-আহবায়ক এবং সাদা দল সমর্থক শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। আজ বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশে বিরাজমান সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা শেষে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে- বিগত ১৫ বছর ধরে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রকৃত তালিকা প্রকাশপূর্বক প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি; বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসে বসবাসরত সকলের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি; শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের কারিকুলামে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার দাবি; বিগত ১৫ বছর ধরে পতিত স্বৈরাচারী সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন এবং সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে জনআকাঙ্খার পরিপন্থী ভূমিকার জন্য সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে নিন্দা জানানো হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সমিতির প্রতি আহবান জানানো হয়; গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার হরণ এবং সাম্প্রতিক গণহত্যার জন্য ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদদের বিচার দাবি; সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির সাথে জড়িত ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের মন্ত্রী, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের বিচার দাবি; স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোথাও কোথাও প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, লুটপাট এবং বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা তার যেসকল নেতাকর্মীকে নির্দেশনা দিচ্ছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য এ সভা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়।

পদত্যাগ করলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সৌমিত্র শেখর

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের পদত্যাগ করেছেন। আজ বুধবার (১৪ আগষ্ট) দুপুরে শিক্ষামন্ত্রণালয় বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠান। এর আগে তার পদত্যাগের দাবিতে ভিসির বাসভবন ও শিক্ষকদের ডরমিটরিতে তালা মেরে দিয়েছিল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এর আগে বুধবার (১৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এরপর শিক্ষকদের ডরমিটরি এবং ভিসি বাংলোতে তালা মেরে দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় ৩ দফা দাবিতে প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা। এসময় উপাচার্য ছাড়াও উপাচার্যের একান্ত অনুগত হিসেবে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়টির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির, পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন এবং পরিবহণ প্রশাসক ড. মোঃ আরিফুর রহমানের পদত্যাগের দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও জরুরি সিন্ডিকেট ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলীয় রাজনীতি আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ এবং পরবর্তীতে দলীয় রাজনীতির অপচেষ্টা করলে শাস্তির বিধানের দাবি জানায় আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি গত ৭ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চার প্রশাসনিক পদে রদবদলকে প্রহসন আখ্যা দিয়ে অফিস আদেশ বাতিল করে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনাপূর্বক নিয়োগের দাবি জানায় আন্দোলনকারীরা। অনতিবিলম্বে এসব দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা জানিয়ে সকাল থেকেই কলা অনুষদ ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এসময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড মো. হাবিব-উল-মাওলা (মাওলা প্রিন্স), হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড. এএইচএম কামাল, সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আহমেদ শাকিল হাসমী উপস্থিত ছিলেন।

মিরপুরে গুলিবিদ্ধ জবি শিক্ষার্থী সাজিদ মারা গেছেন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) একাউন্টিং ও ইনফরমেশন সাইন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরামুল হক সাজিদ মারা গেছেন। বুধবার দুপুর ২টার পর রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসারত অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার সহপাঠীরা। এর আগে গত ৪ আগস্ট ইকরামুল রাজধানীর মিরপুরে আন্দোলনরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ইকরামুল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি রাজধানীর মিরপুরে বলে জানা গেছে।

কুয়েটে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (১১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আনিসুর রহমান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আনিসুর রহমান ভূঁইয়া জানান, বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০২৩ এর ধারা ৪৪(৫) অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনৈতিক সংগঠন ও অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইভাবে ছাত্রদেরও রাজনৈতিক সংগঠনে সম্পৃক্ততা ও কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।এর আগে রোববার বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়ার পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষকরা।

দায়িত্ব নেওয়ার ৫ মাসের মধ্যে পদত্যাগ করলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

অব্যাহতি চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। এছাড়া চবির রেজিস্ট্রার বরাবরও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৫মাসের মধ্যে উপাচার্য পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নূর আহমদ। তিনি বলেন, রোববার রাতে ড. মো. আবু তাহের স্যার পদত্যাগ পত্রটি মেইলে পাঠিয়েছেন। এর আগে এই বছরের ১৯ মার্চ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পান অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিরব ভূমিকা ও ছাত্রীদের সন্ধ্যায় হল থেকে বের করে দেওয়া সহ নানান অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগ দাবি করে শিক্ষার্থীরা। গত ৯ আগস্ট থেকে উপাচার্যসহ প্রশাসনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে শুরু করে চবি শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালে উপাচার্যের বাংলো, কার্যালয়, প্রক্টর ও প্রভোস্টদের কার্যালয়ে তালা দেন তারা। তোপের মুখে প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রভোস্ট পদত্যাগ করে। এবার সে আন্দোলনের মুখে পড়ে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৫মাসের মধ্যে তিনি উপাচার্য পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তবে এখনো পদত্যাগের বিষয়ে মুখ খোলেননি দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে (একাডেমিক) ও অধ্যাপক সেকান্দর চৌধুরী (প্রশাসনিক)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ

ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল পদত্যাগ করেছেন। তিনি ছাড়াও সাতটি হলের প্রভোস্ট পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আজ শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তারা পদত্যাগ করেন। উপ-উপাচার্য ড. সীতেয় চন্দ্র বাছার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রভোস্টরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের অধ্যাপক বিললাহ হোসেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অধ্যাপক আকরাম হোসেন, বিজয় একাত্তর হলের ড. আব্দুল বাছির, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ড. আব্দুর রহিম, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের অধ্যাপক ইকবাল রউফ মামুন, রোকেয়া হলের ড. নিলুফার পারভীন এবং শামসুন নাহার হলের ড. লাফিফা জামাল।

বেরোবিতে আবু সাঈদ নামে হল চেয়েছেন তার বাবা

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) একটি আবাসিক হল করার কথা জানিয়েছেন আবু সাঈদের বাবা। এছাড়াও সাঈদের ভাই আবু হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঈদের নামে একটি অডিটোরিয়াম চেয়েছেন। শনিবার (১০ অগাস্ট) সকালে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি এইসব কথা বলেন। বেরোবি শিক্ষার্থীরা সকাল ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে কবর জিয়ারতের উদ্দেশ্যে আবু সাঈদের বাড়িতে যান। কবর জিয়ারত শেষে তারা সাঈদের পরিবারের সাথে কথা বলেন। এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়েছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পর কথা বলেছেন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এসময় ড. ইউনূসের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবু সাঈদের বাবা। শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে রংপুরের পীরগঞ্জ পৌঁছান তিনি। আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় আবু সাঈদের মা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও ছিলেন অশ্রুসজল। এরপরে ড. মুহাম্মদ ইউনুস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন। আবু সাঈদ যেখানে গুলিবিদ্ধ হন সেই জায়গাটিও পরিদর্শন করবেন তিনি। পরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে ড. ইউনূসের। আবু সাঈদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুরে গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। নয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেইটে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে প্রথম নিহত হয় বেরোবির আবু সাঈদ। সেখানে তিনি ছিলেন এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক। নিহত আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে তার বাড়ি।

অকার্যকর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন প্রত্যাশা চবি সাদা দলের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস তাঁর আন্তরিকতা, নিষ্ঠা এবং দেশপ্রেমকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যে অকার্যকর হয়ে পড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনবেন, এমনটাই প্রত্যাশা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সাদা দলের। শুক্রবার (৯ আগস্ট) চবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, গণতন্ত্র, ইসলামি মূল্যবোধ ও জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ (সাদা দল) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্য সকল উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। সাদা দল বিশ্বাস করে, অধ্যাপক ইউনূস তাঁর আন্তরিকতা, নিষ্ঠা এবং গভীর দেশপ্রেমকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যে অকার্যকর হয়ে পড়া রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে দেশকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে নেবেন। যে কোন প্রয়োজনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সাদা দল ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পাশে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশে বিরাজিত দীর্ঘ ষোল বছরের দুঃশাসন আর স্বৈরাচারীতার অবসান ঘটেছে। ছাত্র-জনতার তীব্র প্রতিরোধের মুখে গত ৫ই আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। ইতিমধ্যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিন্ডিকেট সদস্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সিন্ডিকেটেই সকল ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। এবং তারই আলোকে আজ ১০০ তম সিন্ডিকেট সভায় সকল ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সদস্য আরও জানান, সিন্ডিকেটের সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থী যদি রাজনৈতিক সংগঠন কিংবা তার ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ৪৩ অনুচ্ছেদের ৪ নং ধারায় বলা হয়েছে, কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হইতে পারিবেন না৷ সে জন্য নতুন করে নিষিদ্ধ করার কিছু নাই। প্রসঙ্গত, এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টার মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের রাজনীতি বন্ধের আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। যার প্রেক্ষিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷

প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে রাবি ভিসিসহ ২৯ জনের পদত্যাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তারসহ ঊর্ধ্বতন ২৯ প্রশাসক ও কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) উপাচার্যসহ একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পদত্যাগকারী অন্যরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রণব কুমার পান্ডে, হিসাব পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজ ইনিস্টিউটের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, কোয়ালিটি এসিউরেন্স সেলে পরিচালক ড. দুলাল চন্দ্র রায় এবং সহ-পরিচালক ড. মশিউর রহমান ও ড. আব্দুর রশিদ সরকার, কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক শহিদুল আলম, লিগ্যাল সেলের প্রশাসক সাদিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান গবেষণাগারের পরিচালক সায়েদ মুস্তাফিজুর রহমান, টিএসসিসি'র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মিজানুর রহমান খান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসের প্রশাসক সাখাওয়াত হোসেন, রাকসু কোষাধ্যক্ষ ড. জাফর সাদিক, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, শহিদ মীর আব্দুল কাইয়ুম আন্তর্জাতিক ডরমিটরির অর্ডেন আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক প্রক্টরিয়াল বডির সকল সদস্য পদত্যাগ করেছেন। সহকারী প্রক্টররা হলেন, ড. মাহফুজুর রহমান, ড. পুরনজিত মহালদার, ড. হাকিমুল হক, ড. জহুরুল আনিস, ড. সাইকা কবির মিতু, ড. হামিদুল হক, ড. জাকির হোসেন, ড. কনক পারভেজ, ড. রতন কুমার, ড. কামরুজ্জামান ও ড. আল মামুন। এছাড়াও আরও অনেকেই পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ থেকে পদত্যাগ করেছেন আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. রায়সুল ইসলাম। বুধবার (৭ আগস্ট) সংগঠনটির কনভেনার বরাবর পাঠানো এক চিঠির মাধ্যমে পদ বাতিলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। রাবির সদ্য সাবেক উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটা ১০ মিনিটের রাষ্ট্রপতি সচিবের কাছে মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছি। তারা পেয়েছেন বলে জানিয়েছে। রাবির শিক্ষার্থীরা দাবি করছিলেন পদত্যাগের জন্য। সেজন্য পদত্যাগ করেছি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, পদত্যাগের বিষয়প মৌখিকভাবে অনেকেই আমাকে বলেছেন। আমি এখনো অফিসে যায়নি। তাই কে কে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের সবাইকে রাজাকার ও আলবদর আখ্যা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাবি সমন্বয়ক কমিটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

জাবি ভিসিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেন শিক্ষকদের একাংশ

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলাসহ উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমসহ প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা করেছে শিক্ষকদের একাংশ। শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজ’–এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকেরা। সংবাদ সম্মেলনে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার তিন দফা লিখিত দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং হলগুলোকে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী মুক্ত করতে হবে, উপাচার্য মো. নূরুল আলম, সহ–উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবিরকে পদত্যাগ করতে হবে, ১৫ জুলাই রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যারা নৃশংসভাবে আঘাত করেছে, তাদের বিচার করতে হবে। এসময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় প্রশাসন প্রত্যক্ষ মদদদাতা উল্লেখ করে মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গত ১৫ জুলাই শান্তিপূর্ণ মিছিলে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাসীরা বিনা উসকানিতে হামলা করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে বিচারের দাবিতে অবস্থান নেন। আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করেছি প্রক্টর, উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের ইন্ধনে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে শিক্ষকসহ অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক সামছুল আলম, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, কলা ও মানবীকি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহাকারী অধ্যাপক শিবলী নোমান ও সালমা সাবিহা প্রমুখ।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাবি-রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, যোগ দিলেন শিক্ষকরা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে সারাদেশের সাথে সমন্বয় করে ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ গণমিছিলে হামলা, ছাত্র হত্যা ও নয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় বর্তমান সরকারকে 'স্বৈরাচার' উল্লেখ করে পদত্যাগ দাবি করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রাবি ও রুয়েটের শিক্ষকরাও একাত্মতা পোষণ করে এ বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়। শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১০টায় রাবির প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এ সমাবেশ শুরু করেন তারা। এসময় নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এসময় 'এক দুই তিন চার, স্বৈরাচার তুই গদি ছাড়', 'শিবির ট্যাগের ছলচাতুরী, বুইজা গেছে জনগণ', 'দফা এক দাবি এক, স্বৈরাচারের পদত্যাগ', 'নয় ছয় বুঝি না, কবে যাবি হাসিনা', 'আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই', 'দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেবো রক্ত', 'রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' এমন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। রুয়েট শিক্ষার্থী তানভির হাসান বলেন, সারাদেশের সাথে সমন্বয় করে আজকে আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি। এখানে আমাদের একটাই দাবি স্বৈরাচার সরকারের পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগ ছাড়া শিক্ষার্থী সমাজ আর ঘরে ফিরবে না। এ আন্দোলন আর কোটা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। পুলিশ প্রশাসন আমাদের ভাইদের উপর গুলিয়ে চালিয়েছে, তাদেরকে বলবো এখন সাবধান হোন। আপনাদেরও ছেলে-মেয়ে আছে, তাদের দিকে তাকান। রাবি শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, আবু সাঈদের মতো জীবন দিতে আজকে মাঠে নেমেছি। হয়তো জীবন দেবো না হয়তো স্বৈরাচার সরকার পদত্যাগ করে মাঠ ছাড়বো। আমার ভাইগুলোর রক্তের দাগ বাংলার জমিনে এখনো শুকায়নি। কী দোষ ছিল তাদের? তারা সংবিধান অনুযায়ী তাদের অধিকারের কথা বলেছিল। আজকে আমাদের আন্দোলনের দাবি একটা, স্বৈরাচার সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. ফজলুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমরা তাদের সাথে যোগ দিয়েছি। আর কত ঘরে বসে আমার ছেলেদের রক্ত দেখবো। শিক্ষার্থীদের গায়ে গুলি করতে স্বৈরাচার সরকারের কি একটুও বুক কাঁপেনি? আজ থেকে এ আন্দোলনে গুলি চালালে সেই গুলি আগে শিক্ষকদের গায়ে লাগবে, তারপর আমাদের ছাত্রদের। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আর কোনো ভয় পাবার কারণ নেই। তাদের পিতৃতুল্য শিক্ষকরা আজ থেকে তাদের সামনে থাকবেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি এবং তাদেরকে সুরক্ষা দিতে সবসময় তাদের সাথেই আমরা আছি। গণহত্যার দায় স্বীকার করে স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

আজও বিক্ষোভে নামছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা কর্মসূচিকে ঘিরে আবারও উত্তপ্ত দেশ। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ শনিবার (৩ আগস্ট) সম্মিলিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও পেশাজীবীদের কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাশে যমুনা গেটে বেলা ১১টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন নর্দান, নর্থ সাউথ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল, স্টেট, গ্রিন, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ও ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা। একই সময়ে ব্র্যাক ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি রামপুরা এলাকায় পালন করবেন। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ৯ দফা দাবি ও অসহযোগ আন্দোলন সফলের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এদিকে, আজ শনিবার (৩ আগস্ট) সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ। একইসঙ্গে আগামীকাল রোববার থেকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি’ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) এক ভিডিও বার্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন। আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ আজ তিনি বলেন, সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শনিবার (৩ আগস্ট) সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলো। আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা করছি, আগামীকাল (শনিবার) সারা দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়, প্রতিটি জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। আগামীকালের পর থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন পালিত হবে।’

বৃষ্টিতে ভিজেই ব্র্যাক ও ইস্ট ওয়েস্টের শিক্ষার্থীদের গণমিছিল

শিক্ষার্থী-জনতাকে হত্যা করার প্রতিবাদে ও ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে গণমিছিল কর্মসূচি পালন করেছেন ব্র্যাক ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কয়েকশ’ শিক্ষার্থী। এ সময় শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। শুক্রবার (২ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাজধানীর আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে শিক্ষার্থীদের এই গণমিছিল শুরু হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের গণমিছিলটি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে থেকে শুরু হয়ে রামপুরা ব্রিজ ঘুরে ব্র‍্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে যায়। পরে গণমিছিলটি ব্র‍্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে আবারও রামপুরা ব্রিজ হয়ে দুপুর ১২টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে গিয়ে শেষ হয়। পুলিশের ২৫-৩০ জনের একটি দলকে শিক্ষার্থীদের গণমিছিলের সঙ্গে সঙ্গে চলতে দেখা গেছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গণমিছিলের সামনে ও পেছনে অবস্থান নিয়ে চলতে থাকে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তারা এসেছেন। যেন কোনো দুষ্কৃতকারী শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটাতে পারে। তবে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পুলিশকে বলা হয়, তারা কোনো ধরনের পুলিশি নিরাপত্তা চান না। শিক্ষার্থীরা পুলিশের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কেন এখানে এসেছেন? আপনারা এখান থেকে চলে যান। শিক্ষার্থীরা গণমিছিলে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তারা স্লোগানে বলেন, ‘আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাইরে’, ‘পা চাটলে সঙ্গী না চাটলে জঙ্গি’ ও ‘আবু সাঈদ মরল কেন প্রশাসন জবাব দে’। এর আগে, সকাল ১০টার দিকে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সামনে কয়েকশ শিক্ষার্থী জড়ো হন। এ সময় তারা ইস্ট ওয়েস্টের প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা নানা রকম স্লোগান ও বক্তব্য দেন। তারা ৩-৪টি গান পরিবেশন ও কবিতা আবৃত্তি করেন। সমাবেশ চলাকালে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দেশে অস্থির পরিবেশের মধ্যে সারা দেশে শিক্ষার্থী-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এসবের প্রতিবাদে ও ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের আমরা আমাদের আজকের কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে সারা দেশের মানুষ যোগ দিয়েছে। যত দিন না আমাদের দাবি মানা হবে এবং শিক্ষার্থী জনতাকে হয়রানি বন্ধ করা হবে, ততোদিন আমরা রাজপথে থাকব। নামাজের পর আমাদের শহীদ ভাইদের জন্য দোয়া করা হবে।

কাল দেশব্যাপী ছাত্রজনতার গণমিছিল

ঢাবি: চলমান আন্দোলনে আগামীকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) দেশব্যাপী প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) গণমাধ্যমকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দারি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহীদদের কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্রজনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রদের এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে শ্রমিক, পেশাজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী, আলেম-ওলামাসহ বাংলাদেশের সব স্তরের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একইসঙ্গে মসজিদের ইমাম ও খতিব এবং মাদরাসার শিক্ষকদের ‘ছাত্র জনতার গণমিছিল’ বের করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।