ঢাবিতে পাকিস্তানের 'স্বপ্নদ্রষ্টা' আল্লামা ইকবালের নামে হল দাবি


MARCH NAEEM 2ND/Allama-Iqbal-pk.jpg

পাকিস্তানের “স্বপ্নদ্রষ্টা” আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একটি নতুন হল প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে পাকিস্তানের জাতীয় কবির ৮৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এই দাবি উত্থাপিত হয়।

আল্লামা ইকবালের নামে একটি নতুন হল নির্মাণের দাবি জানিয়ে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, "আল্লামা ইকবাল ১৯৩৮ সালের ২১ এপ্রিল মারা যান। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছিল; সেই ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ।"

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক এবং আল্লামা ইকবাল সোসাইটির সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, "স্বৈরাচারী শাসনামলে আল্লামা ইকবাল সম্পর্কে কথা বলার অনুমতি ছিল না। তাকে নিয়ে দার্শনিক আলোচনা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন, একটি মুক্ত পরিবেশে, তরুণ প্রজন্ম আল্লামা ইকবাল সম্পর্কে জানতে পারছে।"

আব্দুল ওয়াহেদ আরও বলেন, “ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে, ১৯৪৭ সালে আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের মুসলিম জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে স্বাধীনতা দাবি করে পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের পূর্ব অংশ হিসেবে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। অন্যথায়, পূর্ব বাংলা স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে পরিণত হত না বরং পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ত্রিপুরার মতো ভারতের একটি রাজ্য হতো। সেক্ষেত্রে আমরা ভারতীয় মুসলমানদের মতো 'নির্যাতন ও নিপীড়নের' শিকার হতাম।"

আল্লামা ইকবালের রচিত মুসলিম জাতীয়তাবাদের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ অপরিমেয় সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা দাবি করেন, আল্লামা ইকবালের "প্রণোদিত" মুসলিম জাতীয়তাবাদ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরস্পর সংযুক্ত।

বক্তারা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব "দখল" করার প্রয়াসে জাতীয় জীবন থেকে "মুসলিম জাতীয়তাবাদ" মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে।

উল্লেখ্য, আল্লামা ইকবাল ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইরান ছাড়াও আন্তর্জাতিক সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি হিসাবে প্রশংসিত। তিনি “আধুনিক সময়ের মুসলিম দার্শনিক চিন্তাবিদ” হিসেবেও পরিচিত। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ আসরার-ই-খুদী ১৯১৫ সালে পারস্য ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- রুমুজ-ই-বেখুদী, পয়গাম-ই-মাশরিক এবং জুবুর-ই-আজাম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম হল হিসেবে আল্লামা ইকবালের নামে ১৯৫৭ সালে “ইকবাল হল” স্থাপিত হয়। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে আইয়ুব খানের পতনের পর শিক্ষার্থীরা ইকবাল হলের নাম পরিবর্তন করে শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হকের স্মরণে হলটির নতুন নামকরণ করা হয় “সার্জেন্ট জহুরুল হক হল”। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইকবাল হলের নাম দাপ্তরিকভাবে পরিবর্তন করে “জহুরুল হক হল” রাখেন। ২০১৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ “শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল” নামকর করেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×