মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ মিছিল


November 16/du-3_20250118_083205080.jpg

ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু কর্তৃক ‘লাল সন্ত্রাস’ এর ঘোষণার প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। শিক্ষার্থীরা ‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণাকারী মেঘমল্লার বসুকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবি জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, লাল সন্ত্রাসী অপতৎপরতা চালিয়ে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ডাকসু নির্বাচনকে বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে।

‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র উপায়’ বলে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু। একইসঙ্গে ইঙ্গিত দিয়েছেন সশস্ত্র যুদ্ধের। নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করা এক ইংরেজি বার্তায় মেঘমল্লার বসু বলেন, একমাত্র বিকল্প লাল সন্ত্রাস। প্রান্তিক মানুষের স্বার্থে প্রতিরক্ষামূলক সহিংসতা। আমরা জাগরণ এবং মিছিল করি যার সহিংস হওয়ার ক্ষমতা নেই। তা দ্বারা আপনি কখনই আপনার কমরেডদের রক্ষা করতে পারবেন না। মানুষ আপনাকে পছন্দ করবেন ঠিকই,  কিন্তু কেউ অনুপ্রাণিত হবে না। কারোরই আর ‘মুক্তমনা’ পার্টির দরকার নেই। শহীদদের কেউ পরোয়া করে না। ফ্যাসিবাদ তখনই ভালো যখন সে মৃত।

ডানপন্থাকে ইঙ্গিত করে তিনি লিখেন, এই ডানপন্থীদের পাগলামিতে আপনাকে সার্বভৌমত্বের নামে হত্যা করা হবে এবং আপনার চরিত্রকে হত্যা করা হবে। মুক্তমনা এবং ‘কেন্দ্রবাদী’ যারা তাদের হৃদয় তারা ডানপন্থার কাছে বিক্রি করেছে। তারা দাবি করবে এটি একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ এবং উভয়পক্ষই কতটা খারাপ। আপনাদের খুব কম বন্ধুই আছে। এমনকি একজনকেও  হারানোর সামর্থ্য আপনাদের আর নাই। আর মানুষ ভেড়ার মত। আপনি কি আজীবন মেষপালক হতে ইচ্ছুক?

গুপ্তরাজনীতির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, প্রকাশ্য বিক্ষোভ করা বন্ধ করুন। প্রকাশ্যে কমিটি দেয়া বন্ধ করুন। আমরা সতর্ক না হলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। দাঁত ও নখর বেরিয়ে আসছে। এভাবেই আপনার পথকে আপনি ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ থেকে বাঁচাতে পারবেন। আসুন এটিকে আমাদের গুপ্ত বন্ধুদের কাছে নিয়ে যাই। আমাদের সাথেই থাকুন। 

পরে ওই পোস্ট ডিলিট করলেও তার স্ক্রিনশট নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। সরাসরি যুদ্ধ ও নিরাপত্তার জন নিরাপত্তার ওপর আঘাত বলে মনে করছেন সকলেই। 

ফেসবুকে মেঘমল্লার বসুর এমন পোস্টের প্রতিবাদে গতকাল মধ্যরাতে বিক্ষোভ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। 

রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। হল পাড়া থেকে মিছিল নিয়ে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমবেত হয়। এ সময় ‘লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন’, ‘উদ্যানের গাঁজাখোর উদ্যানে ফিরে যা’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, এরা ৮০ ও ৯০ এর দশকের মতো আবারও সন্ত্রাসবাদ কায়েম করতে চায়, তারা ডাকসুকে এভাবেই ভন্ডুল করেছিল ৯০ এর দশকে। আজ ওই সন্ত্রাসীরা আবারও সন্ত্রাসবাদের ঘোষণা দিচ্ছে। এই সন্ত্রাসীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতেই হবে।

এবি জুবায়ের বলেন, আমরা আজকের এই প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ থেকে বলতে চাই এটি সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। তাদেরকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। 

আজিজুল হক নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এই সংগঠন আওয়ামী লীগের বি টিম হিসাবে কাজ করেছে। ছাত্রলীগ সকল সংগঠনকে দমন করেছে কিন্তু এদেরকে জায়গা দিয়েছে। নতুন এই বাংলাদেশে বলতে চাই নতুন করে কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে দেয়া হবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, আমরা যখন ক্যাম্পাসে এসেছি সন্ত্রাসীরা একমাত্র এইসকল বামদেরকে জায়গা করে দিয়েছে। জুলাইয়ের মতো একটি বিপ্লবের পর এখনো দেখছি তারা আওয়ামী ন্যারেটিভকে শক্তিশালী করতে চায়। আমরা দেখি উদ্যানের গেট বন্ধের পর কারা মব করেছে। কারা প্রক্টরের সঙ্গে বাজে ব্যাবহার করেছে। এদেরকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এদেরকে গ্রেফতার করতে হবে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×