চবিতে পোষ্যকোটা বাতিলসহ ৯ দফা দাবিতে ৮ শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন


November 16/bss_20250108_233951609.jpg

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পোষ্যকোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে ১০ ঘণ্টা ধরে আমরণ অনশন করছেন ৮ শিক্ষার্থী।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা এই অনশন শুরু করেছেন।

অনশনরত ৮ শিক্ষার্থী হলেন— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ডানচোখ হারানো বাংলা বিভাগের মো. শুভ হোসেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তানিম মুশফিক, ইতিহাস বিভাগের রশীদুল হক দিনার, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের মো. ইসমাইল, আইন বিভাগের সাইরিব রহমান সুপ্ত। তারা সবাই ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

এছাড়াও বাকি তিনজন হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আশিকুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও একই শিক্ষাবর্ষের নাট্যকলা বিভাগের খান তালাত মাহমুদ রাফি এবং বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সৌরভ সরকার পূর্ণ।

অনশনকারী শিক্ষার্থী তানিম মুশফিক বলেন, ‘চবিতে পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে আমরা আমরণ অনশন শুরু করেছি। যতক্ষণ প্রশাসন পোষ্যকোটা বাতিল করবে না, ততক্ষণ আমরা অনশন ভাঙবো না।’

আরেক অনশনকারী শিক্ষার্থী রশীদুল হক দিনার বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিলো পোষ্যকোটা বাতিল। সেই আন্দোলনে আমাদের চবির দুইজন ভাই শহীদ হয়েছেন। আমরা চাই না চবিতে পোষ্যকোটা থাকুক।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ডানচোখ হারানো আমরণ অনশনকারী শিক্ষার্থী মো. শুভ হোসেন বলেন, ‘আমরা চবিতে পোষ্যকোটা বাতিল চাই। বাতিল না করা পর্যন্ত আমরা অনশন ভাঙবো না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকবার প্রশাসন আমাদের সাথে কথা বলে গেছে। কিন্তু পোষ্যকোটা বাতিলের আগ পর্যন্ত আমরা কোনরকম নেগোসিয়েশনে যাচ্ছি না। ভিসি স্যার আমাদের জন্য কলা নিয়ে এসেছেন। কিন্তু পোষ্যকোটা বাতিলের আগে আমরা কোন কিছুই মুখে তুলবো না।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রবিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছি। তারা আমাদেরকে সময় দিতে চাচ্ছে না।’

শিক্ষার্থীদের অনশনস্থানে এসে তাদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘তাদেরকে বলেছি যে, আগামী রোববার তোমাদের নিয়ে আমরা মিটিং করবো। সেই সিদ্ধান্ত যদি তোমাদের পছন্দ না হয়, তখন তোমরা আবারও অনশন করো। আপাতত আগামী রবিবার পর্যন্ত আমাদের সময় দাও। তোমরা কিছু খেয়ে নাও। কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনছে না।’

এছাড়াও রাত ১০টার দিকে ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার নিজে এসে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের কলা খাওয়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

উল্লেখ্য, এবার ভর্তি পরীক্ষায় ১০ ধরনের কোটা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২১২টি আসন রাখা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা এই কোটা পাবেন। দ্বিতীয়ত, ১৬৬টি আসন রাখা হয়েছে ওয়ার্ড কোটায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা এই কোটা পাবেন। এটি পোষ্য কোটা নামেও পরিচিত। তৃতীয়ত, ১১১টি আসন রাখা হয়েছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য।

অন্যদিকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের জন্য ৯৪টি, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের ৬টি, অ-উপজাতি কোটা (পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি) ৫১টি, শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটা ২০টি, বিকেএসপি কোটা ১১টি, পেশাদার খেলোয়াড় কোটা ৫টি ও দলিত জনগোষ্ঠী কোটা ৯টি।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×