ঢাবি শিক্ষক সঞ্চিতা গুহের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০২:০৫ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক সঞ্চিতা গুহের বিরুদ্ধে ইসলাম বিরোধিতা, জুলাই আন্দোলনে হামলার উসকানি ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষককে যেন বিভাগের চেয়ারম্যান না করা হয় সে দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ‘এক দুই তিন চার, সঞ্চিতা তুই বিভাগ ছাড়’, ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা। একইসঙ্গে দুই দফা দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এই শিক্ষকের ভূমিকা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাইয়ের এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার মদদ দিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সঞ্চিতা গুহ।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর থাকাকালীন সময়ে তার প্রত্যক্ষ মদদে ক্যাম্পাসে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো হয়। তাছাড়াও তিনি বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবেও তখন দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেছেন। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজারুল রহমান বাবুর ফেইসবুক পোস্টে কমেন্ট করে ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হামলার উসকানি দেন। তবুও বর্তমানে তাকে বিভাগের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে, যা ছাত্রজনতার রক্তের সঙ্গে বেইমানির শামিল।
সম্ভাব্য নিয়োগকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে দুই দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা
১. আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর ও সন্ত্রাসীদের ইন্ধনদাতা ড. সঞ্চিতা গুহকে সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া যাবে না।
২. শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য অদম্য-১৪, প্রত্যয়ী-১৫, সংকল্প-১৬, সুশ্চম-১৭ এবং সৌরচান্দ্রিক- ১৮ ব্যাচের কোনো ক্লাস তাকে দেওয়া যাবে না।
সাদমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, তিনি সহকারী প্রক্টর ছিলেন, তার কাজ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম অনুসারে ছাত্রদেরকে আগলে রাখা। অথচ তার প্রতক্ষ মদদে হামলা হয়েছে৷ উল্টো তিনি হামলাকারীদের পক্ষে ছিলেন। আমরা দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই হাসিনা গেছে যে পথে তিনিও যাবেন সে পথে৷
আরফিনা আক্তার নামে বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি তিনি ৫ তারিখ চেয়ারম্যান হিসাবে বিভাগে জয়েন করার চেষ্টা করছেন। অথচ তিনি সেই শিক্ষক যিনি হিজাব নিয়ে হেনস্তা করেন। পর্দা করায় তিনি আমাকে কটূক্তি করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কখনো আফগানিস্তান হবে না। আমি তাকে বলতে চাই বাংলাদেশ কখনো ভারত হবে না।
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, এই শিক্ষক আমাকে প্রতিটা কোর্সে হেনস্তা করেন। আমি অনেক ভালো প্রিপারেশন নেয়ার পরও আমাকে তিনি বি গ্রেডের ওপরে কিছুই দেননি৷ তিনি যদি চেয়ারম্যান হয়ে ফিরে আসেন তাহলে আমাদের কী হবে। আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে?
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, তিনি তার ভাইয়ের ক্ষমতা ব্যবহার করে যত্রতত্র তা প্রদর্শন করতেন। তিনি বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা হয়েও কখনো আমাদের খোঁজ নেননি৷ উল্টো আন্দোলনের সময় তিনি আমাদেরকে নির্যাতনের পক্ষে ছিলেন। তিনি আমাদেরকে নিজেও হুমকি দিয়েছেন। একটি মহল তাকে পদায়ন করার চেষ্টা করছে। আমরা বলতে চাই, শেষ অবধি আমরা তার এই স্বৈরাচার মনোভাবের বিরুদ্ধে লড়ে যাব।