
দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। অবৈধ সম্পদ সঞ্চয় থেকে শুরু করে সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেন ও মানিলন্ডারিং; সব মিলিয়ে দীর্ঘ অনুসন্ধানের পরই দুদক এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানান, সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে গঠিত অনুসন্ধান দল অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করে ফরহাদ হোসেন দম্পতির সম্পদের অসঙ্গতি ও অনিয়মের স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ফরহাদ হোসেন তার নামে মোট ২ কোটি ৪৩ লাখ ৪২ হাজার ৪৬৭ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন। আয়করের নথিতে উল্লেখ থাকা পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪২৩ টাকা। তবে বৈধ উৎস হিসেবে তিনি প্রমাণ দিতে পেরেছেন মাত্র ১ কোটি ৯৫ লাখ ৯৮ হাজার ১৭১ টাকা। ফলে তার জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৫২ টাকা।
এ ছাড়া তার নামে খোলা ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৭১ টাকা জমা এবং ৬ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার ৯৯৬ টাকা উত্তোলনের তথ্য মিলেছে, যা দুদকের ভাষ্যে অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন হিসেবে বিবেচিত।
ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের নামে পাওয়া গেছে ৮০ লাখ ৯৩২ টাকার সম্পদ এবং ১৪ লাখ ৫ হাজার টাকার পারিবারিক ব্যয়সহ মোট ৯৪ লাখ ৫ হাজার ৯৩২ টাকার হিসাব। অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব সম্পদের বিপরীতে তার কোনো বৈধ আয়ের উৎস নেই। দুদক জানিয়েছে, এই সম্পদ আসলে ফরহাদ হোসেনের দুর্নীতি ও ঘুষের অর্থ থেকে এসেছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ সম্পদ অর্জন, জ্ঞাত আয়ের উৎস গোপন ও অবৈধ অর্থ লেনদেনের অভিযোগে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা হয়েছে।
অন্যদিকে, সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।