
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র তিন দিনে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর চোরাকারবারিদের হাত কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাথরের বাজারমূল্য আনুমানিক ৬০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে গোয়াইনঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেছেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোনায়েম। গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৭, ৮ ও ৯ আগস্ট রাত ১টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে স্থানীয় চোরাকারবারিরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি বারকি নৌকা ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের মাধ্যমে এসব পাথর লুট করে নিয়ে যায়। মোট ১০০ থেকে ১৫০ জন জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৫ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর জাফলং-ডাউকি ও পিয়াইন নদীর মধ্যবর্তী প্রায় ১৪.৯৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা “প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা” (ইসিএ) ঘোষণা করলেও সরকারি আইন অমান্য করে নিয়মিতভাবে অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন চালানো হচ্ছে। চোরাকারবারিরা সরকার পতনের সুযোগ, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং রাতের অন্ধকারে নৌকা ও স্থলযান ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ পাথর সরিয়ে নিয়েছে।
গোয়াইনঘাট থানার ওসি জানান, মামলার তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে, কারা পাথর লুটের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র জিরো পয়েন্ট নয়, সরকার পতনের পর পুরো জাফলং এলাকা থেকেও কয়েকশ কোটি টাকার পাথর লুট হয়েছে। যন্ত্র ব্যবহার করে পাথর উত্তোলনের বিষয়ও আলোচিত হয়েছে। গত বছরের অক্টোবরে উপজেলা প্রশাসন ১২০ কোটি টাকার পাথর লুটের তথ্য প্রকাশ করলে পরিবেশ অধিদপ্তর একটি মামলা দায়ের করেছিল। তবে এবার দায়ের হওয়া মামলাটি শুধুমাত্র জিরো পয়েন্টের পাথর লুটকে কেন্দ্র করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানিয়েছেন, “জিরো পয়েন্ট ছাড়াও অন্যান্য এলাকা থেকে পাথর উত্তোলনের ঘটনায় থানায় জিডি ও মামলা রয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরও আলাদা মামলা করেছে। জিরো পয়েন্টে পাথর লুটের ঘটনায় আগে মামলা না হওয়ায় এবার তা দায়ের করা হয়েছে।”