
বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন ছয়টি সম্পত্তি প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ। এসব সম্পদ বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিবিএস ব্যাংক ও ব্রিটিশ আরব কমার্শিয়াল ব্যাংকসহ ঋণদাতাদের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশটির গ্রান্ট থর্নটন প্রশাসকদের।
লন্ডন ও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে অবস্থিত এই ছয়টি সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করার পর যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের বিপুল সম্পদের তথ্য প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি অবৈধ অর্থ যুক্তরাজ্যে পাচার করে প্রায় ১৭ কোটি পাউন্ড মূল্যের সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন; দেশটিতে তার মালিকানায় রয়েছে ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তি।
এই তদন্তটি পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন ও তাদের পরিবারের বিদেশে থাকা সম্পদের অনুসন্ধানের অংশ। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেশ-বিদেশে এসব সম্পদের খোঁজ করছে।
তদন্তের চাপে এ বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার ও শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন। তার বিরুদ্ধেও বাংলাদেশে দুর্নীতির মামলা চলছে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে—আওয়ামী সরকারের কাছ থেকে তিনি অবৈধভাবে একটি প্লট নিয়েছিলেন। যদিও টিউলিপ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) যে সম্পদগুলো জব্দ করেছে, তার মধ্যে লন্ডনের সেন্ট জনস উডের ১ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল বাড়ি এবং ফিটজরোভিয়ার একটি ফ্ল্যাট ব্লক উল্লেখযোগ্য। অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধেই এনসিএ এই পদক্ষেপ নেয়।
সাইফুজ্জামান সবসময় অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তিনি রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার এবং বিদেশে বৈধ অর্থেই সম্পদ কিনেছেন। অন্যদিকে কোম্পানিজ হাউসে জমা দেওয়া নথি অনুযায়ী, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক তার কাছ থেকে প্রায় ৩৫ কোটি ডলার (২৬ কোটি পাউন্ড) পাওনা দাবি করছে।