
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে জয়ের স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। এই বিজয়ের পর দেশব্যাপী উদযাপন কর্মসূচি না করে, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে সিজদায় যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ফলাফল ঘোষণার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এমন ঘোষণা দেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে শিবির সভাপতি লেখেন, "আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ মহান। অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাই বিজয়ী হলো। আমরা সারাদেশের কোথাও কোনো মিছিল করবো না। শুধু মহান রবের নিকট সিজদার মাধ্যমে শুকরিয়া আদায় করবো। এই বিজয় আল্লাহর একান্ত দান। আমরা অহংকারী হবো না, সবার প্রতি উদার ও বিনয়ী থাকবো।"
তিনি আরও বলেন, "স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়ার পথযাত্রী, আমরা থামবো না। প্রিয় মাতৃভূমি হবে সবার বাংলাদেশ।"
ডাকসুর ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম)। তিনি পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ছাত্রদলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, যিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী উমামা ফাতেমা ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট ও শামীম হোসেন ৩ হাজার ৮৮৪ ভোট পেয়েছেন।
জিএস পদেও শিবিরপন্থী জোটের প্রার্থী এস এম ফরহাদ বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। তিনি ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট, আর প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট।
এজিএস পদে একই জোটের মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। এ পদের জন্য ছাত্রদলের প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট, আর বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের প্রার্থী আশরেফা খাতুন পেয়েছেন ৯০০ ভোট।
নির্বাচনের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর)। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ হয়। ৩৮তম এই ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন ৪৭১ জন প্রার্থী, যাঁরা ২৮টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
১৮টি হল সংসদেও ভোট হয় ১৩টি করে পদের জন্য। এসব হল সংসদে মোট ২৩৪টি পদের বিপরীতে লড়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে ৫টি ছাত্রী হলে ভোটার ছিলেন ১৮ হাজার ৯৫৯ জন এবং ১৩টি ছাত্র হলে ভোটার সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৯১৫ জন।