
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রীদের নিয়ে ছাত্রদলের এক নেতার অশালীন মন্তব্য ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে জুলাই-৩৬ হলের সামনে অবস্থান নিয়ে ছাত্রীেরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভে তারা স্লোগান তোলেন “ইভটিজারের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও”, “নারীদের বুলিং করে, প্রশাসন কী করে?”, “ইভটিজারের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না”।
ছাত্রীদের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এগুলো হলো— অশালীন মন্তব্যকারী আনিসুর রহমানের স্থায়ী বহিষ্কার, মনোনয়নপত্র বাতিল ও প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা; একটি সাইবার বুলিং সেল গঠন; এবং ফেসবুকে অশালীন মন্তব্যকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা।
অভিযুক্ত আনিসুর রহমান মিলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হল শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতির দায়িত্বে আছেন। তবে অভিযোগ ওঠার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল তার পদ স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত পদে বহাল থাকবেন না তিনি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাকিলুর রহমান ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামকে নিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “প্রাথমিকভাবে তাকে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি জানিয়েছেন, তার আইডির নিয়ন্ত্রণ তার কাছে ছিল না। সাংগঠনিক দায়িত্বে থেকে এমনটা করার কথা না। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়, তাকে আজীবনের জন্য ছাত্রদল থেকে বহিষ্কার করা হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শাস্তি দেওয়ার জন্য ছাত্রদল থেকে সুপারিশ করা হবে।”
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর অভিযুক্ত নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে হলে দেরি করে ফেরা ৯১ শিক্ষার্থীকে তলব করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জুলাই-৩৬ হল কর্তৃপক্ষ। সেই বিজ্ঞপ্তির ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। পরদিন প্রশাসন সেটি প্রত্যাহার করলেও এ-সংক্রান্ত একটি পোস্টের মন্তব্যে আনিসুর রহমানের আইডি থেকে অশালীন মন্তব্য প্রকাশ পায়, যা নিয়ে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত।