
তিন দশক ধরে সহিংসতায় জর্জরিত পূর্ব কঙ্গোতে শান্তির আশার আলো দেখা দিয়েছে। দেশটির সরকার ও এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিতে সই করেছে, যা দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত নিরসনের পথে বড় এক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির তথ্যমতে, কাতারের রাজধানী দোহায় তিন মাসব্যাপী আলোচনার পর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী ছিল কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধবিরতির আওতায় ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ কার্যকর রাখার অঙ্গীকার ছাড়াও রয়েছে ঘৃণামূলক প্রচারণা এবং বলপ্রয়োগে এলাকা দখলের মতো তৎপরতা থেকে বিরত থাকার প্রতিশ্রুতি।
চুক্তির অংশ হিসেবে পূর্ব ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআরসি) রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ নির্ধারণ এবং একটি বিস্তৃত শান্তিচুক্তির জন্য উভয় পক্ষকে সরাসরি আলোচনায় বসার প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর দোহায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে কঙ্গোর প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত সুম্বু সীতা মাম্বু ও এম২৩-এর স্থায়ী সচিব বেঞ্জামিন এমবোনিম্পা করমর্দনের মাধ্যমে শান্তির বার্তা তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, এম২৩ গোষ্ঠী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ব্যাপক হামলা চালিয়ে গোমা ও বুকাভুর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসব হামলায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এবং লাখো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
রুয়ান্ডা-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি গত মাসে ওয়াশিংটনে কঙ্গো ও রুয়ান্ডা সরকারের মধ্যেও একটি আলাদা শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
রুয়ান্ডা সরকার এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছে এবং বলেছে, এটি “গ্রেট লেকস অঞ্চলে টেকসই শান্তি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
আফ্রিকান ইউনিয়ন চুক্তিটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, “এটি পূর্ব ডিআরসি এবং বৃহত্তর গ্রেট লেকস অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।”
এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কোও চুক্তিটিকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছে।
সূত্র: বাসস