
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকা শহরে মক ভোটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারটি বুথে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও প্রথম ঘণ্টাতেই কেন্দ্রটি হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতির সাক্ষী হয়।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) আয়োজিত মক ভোটিংয়ের মূল লক্ষ্য ছিল সংসদ ও গণভোট একত্রে প্রদানের সময় নির্ণয় করা এবং ভোট পরিচালনায় সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা। প্রথম ঘণ্টায় চারটি বুথে যথাক্রমে ২৩, ৩৭, ২৭ ও ২১ জন ভোট দিয়েছেন। গড়ে একজন ভোটারের ভোট দেওয়ার সময় ছিল এক মিনিট। ভোটাররা জানিয়েছেন, সংসদ নির্বাচনের ব্যালটে ভোট দেওয়া তুলনামূলক সহজ হলেও গণভোটের ‘হ্যাঁ/না’ ভোট বোঝা তাদের জন্য জটিল হয়েছে।
ভোটার শফিকুল ইসলাম বলেন, “গণভোটের ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন। গোলাপি ব্যালেটে লেখা ছোট হওয়ায় ঠিকভাবে পড়া যায়নি। টিক বা ক্রস চিহ্নের মধ্যে একটিতে সিল মেরে দিলাম।” একই ধরনের সমস্যা উল্লেখ করেছেন আবুল কালাম ও হাফিজুর রহমান।
ভোটগ্রহণ শুরু এক ঘণ্টা পর কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি দেখে তিনি কর্মকর্তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ভোট দিতে একজনের কত সময় লাগে তা নিজে পর্যবেক্ষণ শুরু করেন। পুরুষ ও নারী ভোটকেন্দ্রের জন্য ২০ জন করে ভোটার বাছাই করে নতুনভাবে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করেন।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, “ভোটের লাইনে দাঁড়ানো থেকে ভোট দেওয়ার সময় পর্যবেক্ষণ জরুরি। এর ভিত্তিতে ভোটকক্ষ, গোপন কক্ষ ও ভোটকেন্দ্র সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। হযবরল থাকলে কার্যক্রমের সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হবে না।” তিনি ভোটার ছাড়া অন্যদের সাময়িকভাবে সরিয়ে দিয়ে কার্যক্রম চালানোর নির্দেশও দেন।
মক ভোটিংয়ে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা ভোটার সিরিয়াল জানানো, তালিকা যাচাই, ব্যালট সরবরাহ এবং সিল ও কালি প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। ফলে গড়ে একজন ভোটারের ভোট দেওয়ার সময় এক মিনিট ধরা হয়েছে।
গণভোটের ব্যালটে সংবিধান সংশোধনের চারটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব রয়েছে, যেগুলোর বিপরীতে ভোটারদের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দিতে হবে। এছাড়া আলাদা ব্যালটে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী ও প্রতীকের তালিকা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “মক ভোটিংয়ের মাধ্যমে কত সময় লাগে এবং ভোট ব্যবস্থাপনায় কী ধরনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।”
শেরেবাংলা নগর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের কেন্দ্রটি উৎসুক জনতা ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সরগরম ছিল। এটি আগামী গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।