
দুর্নীতির অভিযোগে আইনি চাপে পড়েছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিন। জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অনুসন্ধান চলমান থাকায় তার পরিবারসহ পাঁচজনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
চাঁদপুর-২ (মতলব) আসনে বিএনপির প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা আবেদনের শুনানি শেষে সোমবার ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই আদেশ দেন।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ড. জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সপরিবারে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ বর্তমানে অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে চলে গেলে চলমান অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহে জটিলতা তৈরি হতে পারে। জনস্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন হওয়ায় আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, ড. জালাল উদ্দিন ছাড়াও মামলার অন্যান্য অভিযুক্ত হলেন তার পরিবারের সদস্য শাহানাজ পারভিন, সাঈদ মোহাম্মদ রিজভী, সাঈদ মোহাম্মদ আলভী এবং আয়েশা তাসিনীমা তানিভী।
আদালতে দাখিল করা আবেদনে দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা এস এম মামুনুর রশীদ উল্লেখ করেন, অভিযুক্তরা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে তা নিজেরা ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা করেছেন। একই সঙ্গে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগেও তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, গোপন সূত্রে জানা গেছে যে অভিযুক্তরা দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত কিংবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দুদকের পক্ষে উপস্থিত পাবলিক প্রসিকিউটরের বক্তব্য এবং দাখিল করা নথিপত্র পর্যালোচনা করে আদালত নিষেধাজ্ঞার আবেদন মঞ্জুর করেন।
আদালতের নির্দেশনায় বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন-প্রশাসন), স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ, মালিবাগসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া আদেশ প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্তদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতের আদেশের অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব, পরিচালক (পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন), সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা এবং অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কাছে পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।