
জামালপুরের মেলান্দহে মসজিদের ভেতরে রাজনৈতিক আলোচনা ঘিরে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে মাহমুদপুর ইউনিয়নের পাঁছপয়লা জামে মসজিদে এ সংঘর্ষে জামায়াতের এক স্থানীয় নেতা আহত হন।
আহত ব্যক্তির নাম রবিউল ইসলাম (৪০)। তিনি মাহমুদপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সহ-সাধারণ সম্পাদক এবং ইমামপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এশার নামাজ শেষে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড জামায়াত নেতারা মসজিদের ভেতরে বৈঠকে বসেন। সেই সময় মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি মো. জিয়াউল হক সোহেলসহ কয়েকজন বিএনপি কর্মী সেখানে এসে মসজিদে রাজনৈতিক আলোচনা না করার অনুরোধ জানান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে তর্ক-বিতর্ক এবং পরে হাতাহাতি হয়। এতে রবিউল ইসলাম আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহত রবিউল ইসলামকে প্রথমে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে রাতেই তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঘটনার পরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। জামায়াত নেতাকর্মীরা মেলান্দহ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেন। কিছুক্ষণ পর মাহমুদপুর বাজারে বিএনপি নেতাকর্মীরাও পাল্টা বিক্ষোভে অংশ নেন।
মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মো. জিয়াউল হক সোহেল বলেন, “এশার নামাজ পর জামায়াত ইসলামীর নেতারা মিটিং করছিল। আমিসহ কয়েকজন নিষেধ করতে গেলে তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করে জামা ছিড়ে দেয়। আমাকে মসজিদ থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় জামায়াত নেতা রবিউল। পরে কি হয়েছে জানি না। এর আগেও কয়েকবার জামায়াত ইসলামীর নেতাদের মসজিদে রাজনৈতিক কার্যক্রম করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা শোনেনি।”
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তৈয়বুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সে সময় ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে বসার একটা প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু তারাই আবার বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে আর বসা হয়নি।”
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইদ্রিস আলী বলেন, “মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে শুক্রবার গণসংযোগ কর্মসূচি ছিল। সে বিষয়ে আলোচনা চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা আকস্মিকভাবে হামলা চালিয়ে ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামীর সহ-সম্পাদক রবিউল ইসলামকে আহত করেছে। তার পায়ে আঘাত করা হয়েছে। সে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।”
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম জানান, “জামায়াত ইসলামীর পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সেটি তদন্ত চলছে। এছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকেও মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”