
কলকাতার বেলডাঙায় রাজনীতিবিদ হুমায়ুন কবির প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদের জন্য যে দানের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তার প্রতিক্রিয়া আশ্চর্যজনক। সভাস্থলে রাখা ১১টি দানবাক্স দুই দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ ভর্তি হয়েছে।
রবিবার রাতের বিশেষ মেশিনের মাধ্যমে চারটি বাক্স এবং একটি বস্তা খোলার পর মোট ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার রুপি নগদ পাওয়া গেছে। শুধু নগদ নয়, অনলাইন দানও ব্যাপক, কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে ৯৩ লাখ রুপি জমা হয়েছে।
হুমায়ুন কবিরকে ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর তিনি বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেই সভায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের জন্য ‘শাহী বিরিয়ানি’র আয়োজনও করা হয়। ওই দিনই স্থাপন করা হয় স্টিলের ১১টি বড় দানবাক্স। হুমায়ুন তার অনুসারীদের মসজিদ নির্মাণে সহায়তার আহ্বান জানান, আর তারপর থেকেই দান আসতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। হুমায়ুন জানান, “মানুষ মন খুলে দান করছেন।” দানের পরিমাণ কয়েক কোটি রুপি অতিক্রম করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নগদ রুপি গোনা হয়। সোমবার বিকেল ৫টা থেকে বাকি সাতটি দানবাক্স খোলা হবে। প্রতিদিন ৩০ জন লোক টাকা গণনার কাজ করবেন এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া লাইভ সম্প্রচার করা হচ্ছে, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, দানের পরিমাণ তাদের ধারণার চেয়েও বেশি। বিদেশ থেকেও দান এসেছে। এত টাকা নিরাপদ রাখার জন্য আলাদা ঘর প্রস্তুত করতে হচ্ছে, যেখানে সিসিটিভি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনে আরও কর্মী নেওয়া হতে পারে। ব্যাংকের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।
হুমায়ুন পূর্ব ঘোষণা করেছিলেন, ৬ ডিসেম্বর তিনি মুর্শিদাবাদে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর রাখবেন। এই ঘোষণার পর তৃণমূল তার সঙ্গে দূরত্ব শুরু করে। কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদে ভোটার তালিকা সংশোধনের সভা করেন। হুমায়ুন সেখানে গেলে তখনই জানানো হয়, তিনি দল থেকে বরখাস্ত হয়েছেন। ক্ষুব্ধ হুমায়ুন সভাস্থল ছাড়েন এবং ঘোষণা দেন, ২২ ডিসেম্বর নতুন দল গঠন করবেন। তিনি নিশ্চিত করেছেন, বেলডাঙায় মসজিদটি নির্মাণই করবেন। তার নতুন দল আগামী নির্বাচনে রাজ্যের ১৩৫ আসনে অংশগ্রহণ করবে।