
ভারতের রাজধানী দিল্লির মাদনগিরি এলাকায় এক নারী তার ঘুমন্ত স্বামীর গায়ে ফুটন্ত তেল ঢেলে ও মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন। ২৮ বছর বয়সী দিনেশ নামের ওই ব্যক্তি বর্তমানে সাফদারজং হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
পুলিশ জানায়, ৩ অক্টোবর গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। দিনেশ একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে কর্মরত। ঘটনার সময় তাদের আট বছর বয়সী কন্যা সন্তান বাসায় উপস্থিত ছিল।
হাসপাতালে শয্যাশায়ী অবস্থায় দিনেশ জানান, “রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ শরীরে তীব্র জ্বালা অনুভব করি। চোখ খুলে দেখি আমার স্ত্রী গায়ে ফুটন্ত তেল ঢালছে। এরপর ক্ষতস্থানে মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে দেয়। প্রতিবাদ করতেই সে হুমকি দেয়, ‘শব্দ করলে আরও গরম তেল ঢেলে দেব।’”
দিনেশের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দা অঞ্জলি বলেন, “আমাদের দরজায় কড়া নাড়ার পর ভেতর থেকে দরজা খোলে। দেখি দিনেশ যন্ত্রণায় ছটফট করছেন, আর তার স্ত্রী ঘরের কোণে লুকিয়ে আছেন।”
অঞ্জলির বাবা দ্রুত একটি অটোরিকশা ডেকে দিনেশকে হাসপাতালে পাঠান। প্রাথমিকভাবে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাফদারজং হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরের বড় অংশ পুড়ে গেছে এবং অবস্থা ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’।
পুলিশ জানায়, দিনেশ ও তার স্ত্রীর বিবাহ হয়েছে আট বছর আগে। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। প্রায় দুই বছর আগে স্ত্রী ‘ক্রাইম এগেইনস্ট উইমেন’ সেলে অভিযোগ করেছিলেন, তবে পরে বিষয়টি আপসের মাধ্যমে মীমাংসা হয়।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১১৮, ১২৪ ও ৩২৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা জানান, “দুজনের মধ্যে ঝগড়া আমরা শুনতাম, কিন্তু এমন ভয়াবহ পরিণতি হবে তা কেউ ভাবেনি।”
সূত্র: এনডিটিভি