
গত আগস্টে দেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে বিপুল দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির (বজকস) বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগস্ট মাসে সারা দেশে ৪৯৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আর ১,২৩২ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেলপথে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ২১টি দুর্ঘটনায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ২২ জন, আর ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সব মিলিয়ে আগস্টে মোট ৫৫২টি দুর্ঘটনায় ৫৬৩ জন নিহত এবং ১,২৬১ জন আহত হয়েছেন।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা উল্লেখযোগ্য: আগস্টে ১৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। এটি মোট দুর্ঘটনার ৩৩.১৯ শতাংশ, নিহতের ৩৫.০৫ শতাংশ ও আহতের ১১.৬৮ শতাংশ।
ভৌগলিকভাবে, ঢাকা বিভাগে সর্বাধিক ১৩২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ১২৮ জন নিহত ও ৩৩৩ জন আহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম, মাত্র ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ২২ জন আহত।
প্রতিবেদনে নিহতদের মধ্যে ১২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৬২ জন চালক, ৮২ জন পথচারী, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৯৭ জন শিক্ষার্থী, ১১ জন শিক্ষক, ৯৫ জন নারী, ৪২ জন শিশু, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন আইনজীবী, তিনজন সাংবাদিক এবং ২৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বর্ষায় সড়কের গর্ত, মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়ক বাতির অভাব, মিডিয়ান ও রোড ডিভাইডারের অভাব, বাঁকপথে অন্ধদৃষ্টি, যানবাহনের ত্রুটি, অদক্ষ চালক, অতিরিক্ত যাত্রীবহন, উল্টোপথে যানবাহন চলাচল এবং ট্রাফিক আইন অমান্য। এছাড়া ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি, নসিমন-করিমন এবং পণ্যবাহী যানবাহনও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।
বজকস মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ভবিষ্যতেও দুর্ঘটনার সংখ্যা কমানো কঠিন হবে। সড়ক ব্যবস্থাপনা ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।