
গণভবন কখনোই সরকারিভাবে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পোস্টে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার লেখেন, কয়েক দিন ধরে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন কেন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তর করা হচ্ছে। তাদের যুক্তি, ‘জাদুঘর হবে জাদুঘরের জায়গায়।’ কিন্তু বাস্তবতা হলো, গণভবন কোনোদিনই প্রধানমন্ত্রীদের সরকারি বাসভবন ছিল না। এটি মূলত রাষ্ট্রীয় অতিথিশালা ‘করতোয়া’, যাকে পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানেই এক সময় গুম, খুন, লুটপাটসহ জুলাই হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
তিনি আরও লিখেছেন, ইতিহাসে বহু স্থাপনা পরবর্তীতে জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে। যেমন—পোল্যান্ডে নাৎসি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প এখন জাদুঘর, হিরোশিমায় পারমাণবিক হামলার স্থান শান্তি পার্ক ও জাদুঘরে সংরক্ষিত। একইভাবে ভিয়েতনামের যুদ্ধকালীন কু চি টানেল এখন যুদ্ধ জাদুঘর, আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গেটিসবার্গ ব্যাটেলফিল্ড জাতীয় সামরিক উদ্যান ও জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়েছে।
আবুল কালাম আজাদ আরও উল্লেখ করেন, দক্ষিণ আফ্রিকার রোবেন আইল্যান্ডে নেলসন ম্যান্ডেলাকে যে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছিল সেটিও এখন জাদুঘর। ফ্রান্সে বাস্তিল দুর্গ ভেঙে ফেলা হলেও কিছু অংশ আজও জাদুঘর হিসেবে টিকে আছে। ভারতের জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যার স্থানও স্মৃতিস্তম্ভ ও জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত। এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অ্যানা ফ্রাঙ্ক ও তার পরিবারের লুকানোর স্থানও আমস্টারডামে আজ জাদুঘর।
তিনি লেখেন, “গণভবন জাদুঘরে পরিণত হলে তাদেরই সমস্যা হবে, যারা জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞকে তুচ্ছ মনে করে কিংবা এখনো স্বপ্ন দেখে সেই হত্যাকারীরা ফিরে আসবে।”