
আজ ৭ অক্টোবর, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হন তিনি। তার স্মরণে আজ বিকেল ৩টায় রাজধানীর পলাশী মোড়ে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ নামের একটি প্রতীকী স্থাপনা। উদ্বোধন করবেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। একই সময়ে আয়োজন করা হয়েছে একটি স্মরণসভা, যাতে উপস্থিত থাকবেন ‘আট স্তম্ভ’ নির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা ও আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক আখতার হোসেন।
২০২০ সালের ৭ অক্টোবর, আবরারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের উদ্যোগে একই ধরনের একটি স্তম্ভ প্রথম নির্মাণ করা হয়েছিল, যার নেতৃত্বে ছিলেন আখতার হোসেন। তবে নির্মাণের পর মাত্র ২৪ ঘণ্টার মাথায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্দেশে সেটি ভেঙে ফেলা হয়। এরপর এই উদ্যোগের জন্য আখতার হোসেনকে ছাত্রলীগের হামলা ও নির্যাতনেরও শিকার হতে হয়।
স্থাপনাটির ফলকে লেখা হয়েছে - "অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা, অসীম মহাকাশের অন্তে"; যা আবরারের আত্মত্যাগ ও দর্শনের প্রতীক হিসেবে স্থাপিত হয়েছে। আখতার হোসেন বলেন, আবরার ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছিল বলেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাই তার স্মরণে নির্মিত এই স্থাপনা আগ্রাসনবিরোধী বাংলাদেশের স্বপ্নকে ধারণ করে। তিনি বলেন, যদি এই আটটি বিষয় বাস্তবায়ন করা যায়, তবে আমরা একটি স্বাধীন ও আগ্রাসনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে, বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারকে ডেকে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। তারা তার মোবাইল ফোন থেকে ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে ভারতবিরোধী মতাদর্শের প্রমাণ পেয়ে তার ওপর শুরু করে অমানবিক নির্যাতন। শুরুতে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পেটানো হয় তাকে। এরপর চতুর্থ বর্ষের আরও কয়েকজন এসে চালায় আরেক দফা নির্যাতন। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই নির্যাতনের এক পর্যায়ে আবরার নিস্তেজ হয়ে পড়েন। তাকে সিঁড়িতে ফেলে রেখে হত্যাকারীরা রাতের খাবার খেতে চলে যায়। পরে তার নিথর দেহ হলের ক্যান্টিনে নেওয়া হয় এবং ভোরে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে আবরারকে ধরে সিঁড়ির দিকে নিচে নিয়ে যাচ্ছে।
ঘটনার সময় হল প্রাধ্যক্ষ জাফর ইকবাল খান জানান, রাত পৌনে ৩টার দিকে খবর পেয়ে বুয়েটের একজন চিকিৎসক এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।