
ভূমিকম্পের দুঃসংবাদের মধ্যেই শনিবার সকালে ঢাকা পৌঁছে মানবিক বার্তা দিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। রাষ্ট্রীয় সফরের শুরুর মুহূর্তেই তিনি বাংলাদেশের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির খোঁজ নেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
শনিবার ২২ নভেম্বর সকাল সোয়া ৮টায় ড্রুকএয়ারের এক ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তোবগে। লাল গালিচায় তাকে স্বাগত জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে ভিআইপি লাউঞ্জে দুই নেতার মধ্যে সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়, যেখানে তোবগে আগের দিন শুক্রবারের ভূমিকম্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বলেন, ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির বিষয়টি তাকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে। বৈঠক শেষে তাকে ১৯ বন্দুক স্যালুট ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রওনা হন। সেখানে তিনি বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও স্মারক বইতে স্বাক্ষর করবেন।
সূত্র জানায়, দুপুরে তোবগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন। বিকেল ৩টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার একান্ত বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। দিন শেষে তিনি সরকারি নৈশভোজে যোগ দেবেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ২০ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব মো. আসাদ আলম সিয়াম জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তোবগের বৈঠকের পর প্রতিনিধি পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া এবং শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়গুলো আলোচনায় আসবে।
পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশ বৈঠকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়া বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে। একই সঙ্গে ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনা এবং সেখানকার বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশি পেশাদার নিয়োগে সহযোগিতা চাওয়া হতে পারে। আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও দুই দেশ মতবিনিময় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, আলোচনা শেষে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা নিয়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে পারে। পরদিন ২৩ নভেম্বর তোবগে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং বাংলাদেশ সরকারের আরও কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে তার বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।