
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন গতি দিতে আজ শনিবার ঢাকা আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে বরণ করে নেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সফরের প্রথম দিন দুই প্রধানমন্ত্রী একান্ত আলোচনায় বসবেন, এরপর অনুষ্ঠিত হবে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। বৈঠক শেষে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সরবরাহ, ভুটানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা নিয়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ২০ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে এই সফরসূচি তুলে ধরেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে ২২ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত শেরিং তোবগে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন। তার সঙ্গে থাকবেন ১৩ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল, যার মধ্যে ভুটানের পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী, শিল্প বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ২২ নভেম্বর সকালেই প্রধান উপদেষ্টা বিমানবন্দরে টোবগেকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানাবেন। গার্ড অব অনার গ্রহণ শেষে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাৎ নির্ধারিত রয়েছে।
একই দিনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শেরিং তোবগের একান্ত বৈঠকের পর দুই দেশের প্রতিনিধি দলের বিস্তৃত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্রসচিবের ভাষায়, আলোচনায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া, শিল্পসহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ এই বৈঠকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়া খাতে নতুন কিছু সহযোগিতা প্রস্তাব করতে পারে। পাশাপাশি ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের নিয়োগের বিষয়ে ভুটানের সহযোগিতা কামনা করা হতে পারে। আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক নানা বিষয়ও আলোচনায় আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বৈঠক শেষে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রসচিব। রাতে শেরিং তোবগে রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নেবেন।
২৩ নভেম্বর তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং দেশের ব্যবসায়ী নেতারাও ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য বৈঠকে মিলিত হতে পারেন।
আসাদ আলম সিয়াম বলেন, “২০২০ সালে বাংলাদেশের প্রথম অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি ভুটানের সঙ্গে সম্পাদিত হয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, পারস্পরিক সম্মান ও সৌহার্দ্যের ভিত্তিতে দুই দেশের সহযোগিতা ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং এই সফর সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সহায়ক হবে।
২৪ নভেম্বর সকালেই শেরিং তোবগে ঢাকা ত্যাগ করে থিম্পুর উদ্দেশে রওনা হবেন। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।