
কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি ধনী দেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে জলবায়ু তহবিলে দরিদ্র দেশগুলর জন্য বছরে ৩০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি।
সম্মেলনে উপস্থিত ২০০ দেশের মধ্যে আলোচনা চলায় শুক্রবার (২২ নভেম্বর) শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা শনিবার (২৩ নভেম্বর) শেষ হয়েছে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আগামী এক দশকের জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে এই দীর্ঘ আলোচনা হয়।
শুক্রবার আজারবাইজানের সভাপতিত্বে কপ ২৯ সম্মেলনে ২৫০ বিলিয়ন ডলার তহবিলের খসড়া চুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলো এই পরিমাণকে ‘অপমানজনকভাবে কম’ বলে প্রত্যাখ্যান করে।
ধনী দেশগুলো নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে সম্মত হয়েছে বলে পাঁচটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের নাম উঠে এসেছে। তবে এই প্রস্তাব উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে পৌঁছেছে কি না বা তাদের সমর্থন আদায় করতে পারবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বর্তমান প্রস্তাবটি ২০২৫ সালে শেষ হতে যাওয়া বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার তহবিল প্রতিশ্রুতির স্থলাভিষিক্ত হবে। তবে শুধু মোট অর্থের পরিমাণই নয়, আলোচনা চলছে কারা তহবিলে সহায়তা দেবে ও কতটা অনুদান হিসেবে প্রদান করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ একাধিক ধনী দেশ জানিয়েছে , চীন ও তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশগুলোর মতো অন্যান্য অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশকেও তহবিল প্রদানে অন্তর্ভুক্ত করা হোক।
এবারের কপ সম্মেলনকে ব্যর্থ ঘোষণা করে প্রখ্যাত পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা ভয়াবহ। যদিও এ নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা নেই বললেই চলে, কিন্তু এরপরও এরকম ধারাবাহিক বিশ্বাসঘাতকতার জবাবে ক্ষোভ ছাড়া কিছু প্রদর্শন করতে পারব না।
ক্ষমতাসীনরা আবারও জলবায়ু সংকটের প্রভাবিত হতে যাওয়া অসংখ্য মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিতে সম্মত হচ্ছে। তারা সব ভুয়া সমাধান ও ফাঁকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৈশ্বিক উত্তরের দেশগুলোর যে জলবায়ু ঋণ, তা পরিশোধের কোনো চেষ্টাই করছে না তারা, যোগ করেন গ্রেটা।
এই জলবায়ু চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি ওপকে হোয়েকস্ট্রা বলেন, জলবায়ু অর্থায়নের নতুন যুগের সূচনা হিসেবে কপ২৯ সম্মেলনকে বিশ্ব স্মরণে রাখবে। অন্যদিকে চুক্তির সমালোচনা করে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার শিফট আফ্রিকার পরিচালক মোহামেদ আদোউ বলেছেন, উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য এই কপ একটি বিপর্যয়। ধনী দেশগুলো—যারা জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি করে, তারাই পৃথিবী ও এর বাসিন্দাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।