
সর্বাত্মক কর্মবিরতির ফলে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোরেলের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী উত্তরা থেকে বেলা ৩টা এবং মতিঝিল থেকে ৩টা ২০ মিনিটে ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও কোনো ট্রেনই স্টেশন ছাড়েনি, ফলে হাজারো যাত্রী পড়েন বিপাকে।
দুপুর পৌনে চারটার দিকে শেওড়াপাড়া স্টেশনে গিয়ে ট্রেন না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েন আল আমিন সজীব। তিনি প্রথম আলোকে জানান, স্টেশনে ওঠার সিঁড়ির কলাপসিবল গেটে তালা ঝুলছিল। ভেতরে ঢোকার অপেক্ষায় বিপুল সংখ্যক মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাইরে রাস্তায়ও বাড়তে থাকে যাত্রীর চাপ। বাস, সিএনজি বা অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল না পেয়ে তিনি শেষ পর্যন্ত বেশি ভাড়ায় রিকশায় কারওয়ান বাজার যেতে বাধ্য হন।
স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা প্রণয়নে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে ডিএমটিসিএলের একাংশের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা আজ সকাল ৭টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন। যদিও বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছিল, শুক্রবার মেট্রোরেল স্বাভাবিক সময়সূচি অনুযায়ী চলবে- কিন্তু আন্দোলনকারীরা এই ঘোষণা উপেক্ষা করেন।
ডিএমটিসিএল–এর জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করলেও যাত্রীসেবা বন্ধ করায় বিষয়টি সরকার গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছে।
সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তখন জানানো হয়, আগামী ১৮ ডিসেম্বর বিশেষ বোর্ড সভায় স্বতন্ত্র চাকরি বিধিমালা অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে। যদিও এটিকে দাবি পূরণের অগ্রগতি হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়, কিছু আন্দোলনকারী তাৎক্ষণিক অনুমোদনের দাবি জানিয়ে বসেন।
রাতেই আন্দোলনকারীরা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে চাকরি বিধিমালা অনুমোদন না হওয়ায় শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালিত হবে এবং যাত্রীসেবা দেওয়া হবে না। সকাল থেকেই তারা দিয়াবাড়িতে অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন।
ডিএমটিসিএলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সরকারি ছুটির দিনেও অফিসে এসে আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, তবে তাৎক্ষণিক অনুমোদনের দাবিতে আন্দোলনকারীরা অনড় থাকেন। যাত্রীসেবা বন্ধ করে দেওয়ায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি সরকার ও ডিএমটিসিএল গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে, কারণ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর যেকোনো আন্দোলন-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ এবং আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা রয়েছে।