প্রার্থীতা প্রত্যাহারের চাপ: জাকসু নির্বাচনে নতুন বিতর্ক
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৯:৪২ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। রফিক-জব্বার হল সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভীতিকর মন্তব্য ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি অডিও ক্লিপ এই ঘটনা শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগে অভিযুক্ত আরফুর সাদী, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৫২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, প্রতিদ্বন্দ্বী তানজিম হোসেনকে হুমকি দিয়েছেন বলে বলা হয়েছে। ভুক্তভোগী তানজিম হোসেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৫৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং রফিক জব্বার হল সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) তানজিম হোসেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনী আচরণবিধির ধারা ১৩ (ক) ও (খ) লঙ্ঘনের বিষয়টি, অভিযুক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল ও নির্বাচনী প্রচারণায় প্রশাসনিক নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২০ আগস্ট রাত প্রায় ১০টার দিকে তানজিম হোসেনকে হলের কমন রুমে ডেকে নিয়ে ৫২তম আবর্তনের কিছু শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আরফুর সাদী নানা ধরনের চাপ ও ভীতিকর মন্তব্য করেন। অভিযুক্ত প্রার্থী বলেন, ৫৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা কোনো পদে বসতে পারবে না এবং আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা আমার জন্য ক্ষতিকর ও ধ্বংসাত্মক হবে।
পরবর্তীতে ২৬ আগস্ট একটি ফেক জিমেইল আইডি থেকে ভুক্তভোগীর ইমেইলে সেই দিনের অডিও ক্লিপ আসে, যেখানে হুমকিমূলক মন্তব্য স্পষ্টভাবে শোনা যায়। তানজিম হোসেন অভিযোগ করেছেন, ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিক চাপে আছেন এবং নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অভিযুক্ত আরফুর সাদী বলেন, “সেদিন আমরা হলের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেছি। এরপর আমাদের ইমিডিয়েট জুনিয়র ৫৩ ব্যাচের সঙ্গে বসে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছি। হুমকি নয়, বড় ভাই হিসেবে আমি বলেছি যে, ‘তোমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছো তা ক্ষতিকর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদে দাঁড়িয়ে মনোমালিন্য এড়ানো সম্ভব।’”
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের এই অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশন কী ব্যবস্থা নেবেন তা জানানো হয়নি, তবে অভিযোগ জমা দেওয়ার পর পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার অডিও ক্লিপটিতে পুরো আলোচনার রেকর্ড না দিয়ে শুধু আমার বক্তব্যকে কাটছাঁট করে ফেসবুকে পোস্ট করে আমার সম্মানহানি করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার দাবি, সেই অডিওর মেটা ডাটা এবং সম্পূর্ণ অডিও ক্লিপ প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া ওই অভিযোগকারী শিক্ষার্থী ছাত্রদলের সাথে যুক্ত বলে জানতে পেরেছি, আমি নিজেও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আজ নির্বাচন কমিশন থেকে আমার কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রাখতে চাই।
এ বিষয়ে রফিক জব্বার হল সংসদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া জানান, “এ বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে। অভিযোগটি প্রক্রিয়াধীন আছে, আমরা বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে ঘটনার শুনানি নিচ্ছি।