
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ তুলেছেন, দেশে নতুনভাবে ‘চেতনার ব্যবসায়ীরা’ সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর পরীবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় যুব শক্তির জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৫-এ বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর ভাষ্য অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে কেন্দ্র করে দেশে আবারও ‘চেতনার ব্যবসা’ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ব্যবসা করেছিল। এখন নতুন চেতনার ব্যবসাদার হাজির হয়েছে আমাদের সামনে। আমরা তাদের উদ্দেশ্য বলব, বাংলাদেশে চেতনা দিয়ে পলিটিকস হয় না।’
জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ করে তিনি সমালোচনা করেন যে সংগঠনটি গণ-অভ্যুত্থানের নামে নতুন ধরনের ধর্মভিত্তিক বক্তব্য প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি বলেন, ‘আরেকটা নতুন দলের এখন পাখনা গজাইছে; জামায়াত ইসলামী। গণ-অভ্যুত্থানের এখন নতুন চেতনার কথা বলে তারা নতুন ধর্ম ব্যবসা করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।’ এরপর তিনি যোগ করেন, ‘যদি রাজনীতি করতে চান, সোজা পথে আসুন। তাদের মিষ্টি মিষ্টি কথার আড়ালে কী আছে, সেটা তো আল্লাহ জানে।... পাকিস্তানেও এ ধরনের জামায়াতে ইসলামীর একটি পাখা গজায়ছিল। একটি আসনও তারা পায়নি।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করেও কড়া মন্তব্য করেন তিনি। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সব সেক্টরে দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে নাসীরুদ্দীন বলেন, কয়েক দিন আগে বিএনপি বলেছে তারা নাকি দেশে দুর্নীতি হলে শেষ করবে। তার কথায়, এটি ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একটি জোকারি’।
গণ–অভ্যুত্থানের পর জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি আন্দোলনের নেতাদের প্রলোভন দেখানোর চেষ্টা করেছে বলেও দাবি করেন তিনি। নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘এ গণ-অভ্যুত্থানের পর জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপি গণ-অভ্যুত্থানের নেতাদের (নির্বাচন) আসনের লোভ দেখিয়ে কিনতে চেয়েছিল। আমরা বলেছিলাম, নব্বইয়ের ছাত্রনেতারা বিক্রি হয়েছে, চব্বিশের কোনো ছাত্রনেতা ইনশাআল্লাহ, বিক্রি হবে না, হবে না, হবে না, হবে না।... আমরা কোনো শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করার জন্য পলিটিকসে নামি নাই। আমরা কোনো চেতনা ব্যবসা করতে চাই না।’
তিনি আরও মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি একসঙ্গে জাতীয় সরকারের রূপরেখা দাঁড় করাতে পারত, তাহলে নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে দেশকে দুর্নীতির চক্র থেকে বের করে আনা যেত। তার অভিযোগ, বিএনপি, জামায়াতসহ অতীতের রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতার কারণেই দেশ এক-এগারোর মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল এবং তরুণ প্রজন্মকে তীব্র নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আকতার হোসেন, যুব শক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম, সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক ফরহাদ সোহেল, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদা বুশরা এবং জাতীয় যুব শক্তির জ্যেষ্ঠ সংগঠক ইয়াসিন আরাফাত।