
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নেওয়ার সুপরিকল্পিত রোডম্যাপ কেবলমাত্র বিএনপিরই রয়েছে, অন্য কোনো দলের নেই।
ঢাকার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি তিনি এ মন্তব্য করেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, “বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ট্র্যাক রেকর্ড আমরা অতীতে দেখেছি। তাদের কাছে কোনো প্ল্যান নেই। কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে রাষ্ট্র চলে না, জনগণের পেটের খাবার কর্মসংস্থান ও অর্থের সংস্থান হয় না। এসব কিছুর জন্য পরিকল্পনা লাগে।”
তারেক রহমান আরও বলেন, জনগণ তাদের কাছে জানতে চায়, দেশ পরিচালনার পরিকল্পনা কী, এবং তাদের সমস্যাগুলো কীভাবে সমাধান করা হবে। তাই পুরো পরিকল্পনা জনগণের সামনে তুলে ধরাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, নারী শিক্ষার প্রসার, ক্রীড়ার উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, বেকারত্ব দূরীকরণ, তরুণদের প্রশিক্ষণ, শিল্প খাত সম্প্রসারণ, ফ্যামিলি কার্ড, ফার্মাস কার্ড, স্বাস্থ্য কার্ডসহ বিএনপির সকল পরিকল্পনা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে।
বিএনপি দেশকে দুর্নীতির কবল থেকে মুক্ত করতে বারবার সফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির আমলে দুর্নীতির সূচক কমেছে। প্রতিবার ক্ষমতায় গেলে সরকার দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমলে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পথে ছিল এবং ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার সরকার দেশের দুর্নীতির অবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছিল। তারেক রহমান বলেন, “খালেদা জিয়া দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করেছিলেন। তখন সরকারি কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে অনুমতি লাগত না। অথচ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সেই আইন পাল্টে ফেলে। বিএনপির রাষ্ট্রক্ষমতায় এ সব নিয়ম পুনঃস্থাপন করা হবে।”
তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপির শক্তিশালী ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জীবন বাজি রেখে ভারতকে তাড়িয়ে তালপট্টি দ্বীপ নিয়ন্ত্রণে আনেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের উদ্যোগও একমাত্র বিএনপিই নিয়েছে।
নারী সমাজকে স্বাবলম্বী করার ওপর জোর দিয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাদের ঘরে আটকিয়ে রাখা নয়, বরং ক্ষমতায় এলে চার কোটি পরিবারের নারী প্রধানদের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার কথাও উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যে কোনো মূল্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। অন্যায় যে করে সে কোনো দলের হতে পারে না, সে অন্যায়কারী। অতীতে দলের কেউ অন্যায় করলে বিএনপি দলীয়ভাবে নয়, আইন দিয়ে বিচার করেছে। আগামীতেও আমরা সেটাই করবো।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ব্যক্তির চেয়ে দলকে প্রাধান্য দিতে হবে। দেশ গড়ার কর্মসূচি সফল করতে হলে মানুষের সমর্থন অপরিহার্য। তিনি বলেন, “দেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে আমাদের লিফলেট আকারে পরিকল্পনাগুলো প্রচার করতে হবে। আজকের কর্মপন্থা হলো দেশের জনগণকে আমাদের পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পাশাপাশি ‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।