
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার জন্য উপযুক্ত নয়। বিশেষ করে হৃদ্যন্ত্রের জটিল সমস্যা তাকে বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
এছাড়া, ডায়াবেটিস, কিডনি ও ফুসফুসসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতাগুলোও অপরিবর্তিত রয়েছে। বর্তমানে তাকে ঢাকায় রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং প্রতিদিনই তার ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা এখনও তার শারীরিক অবস্থাকে গুরুতর হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কিডনির কার্যক্ষমতা স্থিতিশীল না হলে সামগ্রিক শারীরিক অবস্থায় স্থায়ী উন্নতি আসা কঠিন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) এই পরিস্থিতিতে পর্যন্ত বিএনপি বা পরিবারের পক্ষ থেকে লন্ডনে নেওয়ার বিষয়ে নতুন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কাতার আমিরের পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর প্রক্রিয়াও স্থগিত রাখা হয়েছে। জানা গেছে, কাতার আমিরের পক্ষ থেকে জার্মানভিত্তিক এয়ারলাইনস এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের মাধ্যমে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, এফএআই এভিয়েশন গত শনিবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ ও উড্ডয়নের অনুমতির জন্য আবেদন করেছিল এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অনুমোদনও দিয়েছিল। তবে অবতরণ ও উড্ডয়নের সূচিতে পরিবর্তন এসেছে।
এদিকে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান প্রতিদিন এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারকি করছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) চিকিৎসার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য হিসেবে ডা. জুবাইদা রহমান চিকিৎসক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ম্যাডামের চিকিৎসার দেখভাল করছেন।’
চিকিৎসকেরা মনে করছেন, আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশি বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতা সহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর তাকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলমান।