
সমুদ্রের নিচে ডুবে থাকা মিসরের অতীত আবারও রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে আলেক্সান্দ্রিয়ার উপকূলে। সেখানে প্রত্নতত্ত্ববিদরা আবিষ্কার করেছেন প্রাচীন মিসরের এক বিলাসবহুল রাজকীয় প্রমোদতরী- যা গ্রিক ইতিহাসবিদ স্ট্রাবোর বর্ণনার সঙ্গে আশ্চর্যজনকভাবে মিলে গেছে। গবেষকদের মতে, মিসরে এ ধরনের নৌযান এটাই প্রথম উদ্ধার।
প্রায় দুই হাজার বছর আগে নির্মিত ওই প্রমোদতরীর দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৩৫ মিটার এবং প্রস্থ সাত মিটার। মাঝ বরাবর ছিল উঁচু প্যাভিলিয়ন ও সজ্জিত কেবিন, যেখানে রাজপরিবারের সদস্যরা উৎসব ও আনুষ্ঠানিক যাত্রায় ভ্রমণ করতেন।
গবেষণায় জানা গেছে, নৌযানটি চালাতে অন্তত ২০ জন বৈঠাচালক লাগত। ডুবে যাওয়া অ্যান্টিরোডোস দ্বীপের কাছে, প্রাচীন পোর্টাস ম্যাগনাস বন্দরের অংশে এটি শনাক্ত করা হয়। খ্রিষ্টপূর্ব ২৯ থেকে ২৫ সালের মধ্যে আলেক্সান্দ্রিয়া ভ্রমণকারী প্রখ্যাত গ্রিক ভূগোলবিদ ও ইতিহাসবিদ স্ট্রাবো তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘জিওগ্রাফিকা’-তে এমনই এক প্রমোদতরীর উল্লেখ করেছিলেন।
স্ট্রাবোর বর্ণনায় বলা হয়, রাজদরবারের সদস্যরা এই ধরনের নৌযানে চড়ে উৎসব, শোভাযাত্রা ও নাচ-গান ভরা আনন্দরাত কাটাতেন। অনন্য নকশার কারণে শুরুতে গবেষকরা ধারণা করেছিলেন, হয়তো দুটি জাহাজ একটির ওপর আরেকটি চাপা পড়ে আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খ্রিষ্টীয় ৫০ সালের দিকে আইসিস মন্দির ধ্বংসের সময় ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসের ফলেই এটি পানির নিচে তলিয়ে যায়।
গবেষকদের বিশ্বাস, এই আবিষ্কার রোমান আমলের মিসরের বিলাসী জীবনযাপন, ধর্মীয় আচার এবং জলপথ-নির্ভর সংস্কৃতি সম্পর্কে নতুন তথ্য উন্মোচন করবে। সংরক্ষণের স্বার্থে প্রমোদতরীটি সমুদ্রতলেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত খননকাজ চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ।