
সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ প্রকাশ এবং নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর নিশ্চয়তা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস পাওয়ায় তারা এই পর্যন্ত চলমান আন্দোলন স্থগিত রেখেছেন।
তবে শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না এলে তারা আবারও কঠোর কর্মসূচিতে ফিরে যাবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকা কলেজের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এ তথ্য জানান।
তারা বলেন, সাত কলেজ ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা বঞ্চনা, অব্যবস্থাপনা এবং মানসম্মত শিক্ষার সংকটে ভুগছে। তাই দীর্ঘ এক বছর ধরে তারা সাত কলেজকে একত্রিত করে নতুন ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে আন্দোলন চালাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মতে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে দীর্ঘদিনের শোষণ ও বঞ্চনার অবসান হবে এবং উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান ও গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া প্রকাশের কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও ‘শিক্ষা সিন্ডিকেট’ ও বিভিন্ন মহলের চাপে সরকার অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত করতে পারছে না। এ অবস্থায় গত ৭ ডিসেম্বর তারা শিক্ষা ভবনের সামনে দ্রুত অধ্যাদেশ প্রকাশ এবং নতুন সেশনে ক্লাস শুরুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
এর আগে, সোমবার দুপুরে মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে ডেকে আলোচনার আয়োজন করে। বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পরিমার্জিত খসড়া ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তোলা হবে। তবে খসড়া বা চূড়ান্ত অধ্যাদেশ প্রকাশের সুনির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এছাড়া নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস ১ জানুয়ারি থেকে শুরু করার কথাও জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রবিন হোসেন বলেন, “আমরা সবসময়ই সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এবারও আমরা প্রতিশ্রুত সময়সীমা সম্মান জানাতে চাই। তবে অধ্যাদেশে যদি শিক্ষার্থীদের অধিকার, গুণগত শিক্ষার নিশ্চয়তা এবং দীর্ঘদিনের দাবি অক্ষুণ্ণ না থাকে, তাহলে আমরা সেটি মানব না। আমাদের আশঙ্কা, আগের খসড়ায় বড় ধরনের সংশোধনী এনে ষড়যন্ত্রকারীরা শিক্ষার্থীদের অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্দোলনের এই দফা স্থগিত রাখছি। সাত কলেজের সব শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে যদি সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে, তাহলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”