
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আযমের ছেলে ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী জেআইসি সেল বা আয়নাঘরে ছিলেন না বলে দাবি করেছেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু। তিনি জানান, আযমীকে কথিত আয়নাঘরে নয়, বরং একটি এয়ারকন্ডিশনড কক্ষে রাখা হয়েছিল।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের প্যানেলে এ দাবি উপস্থাপন করেন দুলু। গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় গ্রেপ্তার তিন সেনা কর্মকর্তার পক্ষেই লড়ছেন তিনি।
দুলু বলেন, “২১/১৭ ফুটের কক্ষে ছিলেন ব্রিগেডিয়ার আযমী। ওই কক্ষে দুটি দরজা, পাঁচটি জানালা, একটি খাট, একটি টেবিল ছিল। জানালাগুলো বন্ধ থাকতো। তবে একটি এসি ছিল। এছাড়া ওয়্যারড্রব, আলমারিও ছিল। অতএব এটি আয়নাঘর ছিল না। অন্য কোনো জায়গা ছিল।”
মামলায় গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তা হলেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। তাদের পক্ষে চারটি গ্রাউন্ড তুলে ধরেন দুলু, যার মধ্যে ছিল বেআইনি আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও গুম করে রাখা। তিনি আদালতকে এসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়ার অনুরোধ করেন এবং আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চান।
পরে পলাতক পাঁচ আসামির হয়ে শুনানি করেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী হাসান ইমাম। আর শেখ হাসিনার পক্ষে শুনানি করেন আমির হোসেন।
শুনানির পর প্রেস ব্রিফিংয়ে দুলু বলেন, “আমরা ডিসচার্জ নিয়ে শুনানি করেছি। আমরা চারটি গ্রাউন্ড তুলে ধরেছি। এর মধ্যে প্রসিকিউশনের উপাদান অনুযায়ী তিনটিই অনুপস্থিত।” তিনি জানান, অভিযোগে যেসব ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তানভির ও মাহবুবুর রহমান ডিজিএফআইয়ে যোগদানের আগেই সংঘটিত হয়েছে। এমনকি ভুক্তভোগী আযমী ও মাইকেল চাকমার অপহরণ ও গুমের সময় এ তিনজনই ওই সংস্থায় কর্মরত ছিলেন না।
দুলু আরও বলেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত আদালতে আযমী অভিযোগ করেছিলেন এবং সে আদালতের প্রতিবেদন অনুসারে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। “সেখানেও এই তিনজনের কোনো দোষ নেই,” মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে তারা ট্রাইব্যুনালে আযমীর অবস্থান করা কক্ষের বর্ণনাও উপস্থাপন করেছেন। তার ভাষায়, “আমরা সাবমিশনে বলেছি যে আর্মির তদন্ত আদালতের প্রতিবেদন অনুসারে ওটা আয়নাঘর ছিল না। অন্য কোনো জায়গা ছিল। যার কারণে এই ভুক্তভোগীকে আয়নাঘরে আটক রাখার জন্য এই আসামিদের কোনো দায় নেই।”